ঢাকা, সোমবার, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

যেভাবে এলেন শান্তা ক্লজ

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
যেভাবে এলেন শান্তা ক্লজ ছবি: সংগৃহীত

শান্তা ক্লজ বড়দিনের আগে একজন মজাদার-প্রেমময়, উপহার প্রদানকারী ও শান্তিকামী মানুষ, যিনি আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চান। শেষ পর্যন্ত কাল্পনিক চরিত্রের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি হয়ে ওঠেন শুভেচ্ছার দূতও।

উদার মধ্যযুগীয় খ্রিস্টান পাদ্রি সেন্ট নিকোলাসকেই আধুনিক যুগের শান্তা ক্লজের পেছনের অনুপ্রেরণা বলে মনে করা হয়।   চতুর্থ শতকে তুরস্কের ছোট রোমান নগর মুরার বিশপ ছিলেন এই সন্যাসী।

ডাচ ভাষায় শান্তা ক্লজকে ডাকাও হয় সিন্টার ক্লাস (সেন্ট নিকোলাসের সংক্ষিপ্ত রূপ) নামে। সিন্টার ক্লাস থেকেই বাকি পৃথিবীতে মূলত শান্তা ক্লজ নামটির উৎপত্তি।

২৮০ সালের দিকে এশিয়া মাইনর বা বর্তমান তুরস্কের পাতারা অঞ্চলে সেন্ট নিকোলাসের জন্ম হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। সততা ও দয়ার জন্য সবাই তাকে পছন্দ করতেন। সম্পদশালী এই মানুষটি সব সময় গরিব-দুখী ও অসহায়দেরকে সহায়তা করতেন।

এমনকি একবার তিনি দাস হিসেবে বিক্রি হওয়া থেকে তিনজন মেয়েকে রক্ষা করে তাদের বিয়ের জন্য যৌতুক ও সম্পূর্ণ খরচ প্রদান করেন।

এক সময় সেন্ট নিকোলাসের এসব দান-দক্ষিণা ও মহানুভবতার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি মানুষের রক্ষক হিসেবে পরিচিতি পান। তার মৃত্যুর দিন ০৬ ডিসেম্বরকে সবাই বিয়ে করা বা কেনাকাটা করার দিন হিসেবে পালন করতেন। রেনেসা পর্যন্ত ইউরোপে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সেন্ট নিকোলাস।

সেন্ট নিকোলাস আমেরিকায় পরিচিতি পান অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে। ১৭৭৩ ও ১৭৭৪ সালে পর পর দু’বার নেদারল্যান্ডের একটি পত্রিকায় এক ডাচ পরিবারের সেন্ট নিকোলাসের মৃত্যুবার্ষিকী পালনের খবর প্রকাশিত হয়।

বড়দিনে বা ক্রিসমাসে সবাইকে বিশেষ করে বাচ্চাদেরকে উপহার দেওয়ার রীতি শুরু হয় ঊনবিংশ শতকের শুরু দিকে। ১৮২০ সালের দিক থেকে ক্রিসমাস উপলক্ষে দোকানগুলো বিজ্ঞাপন দিতো, পত্রিকায় বিশেষ সংখ্যা বের হতো যেগুলোতে প্রায়ই শান্তা ক্লজের ছবিও ছাপা হতো।

১৮৪১ সালে ফিলাডেলফিয়ার একটি দোকানে একটি মানুষ আকৃতির শান্তা ক্লজ তৈরি করা হয়, যা দেখতে হাজার হাজার শিশু ভিড় জমিয়েছিল। এরপর থেকে বাচ্চা ও তাদের বাবা-মাদের আকৃষ্ট করতে দোকানগুলোতে জীবন্ত শান্তা ক্লজ সাজানোর রীতি চালু হয়।

১৮২২ সালে ক্লেমেন্ট ক্লার্ক মুর ক্রিসমাস উপলক্ষে একটি কবিতা লেখেন। এখন আমরা শান্তা ক্লজের যে রুপ দেখি, সেটি আসলে এ কবিতা থেকেই শুরু হয়েছিল।

লাল পোশাক পরা সাদা দাড়িওয়ালা এক সন্ত ৮টি হরিণ টানা গাড়িতে উড়ে উড়ে বাচ্চাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উপহার বিতরণ করছেন- এমনই এক চিত্র ফুটে উঠেছিল তার কবিতায়। খুব শিগগিরই কবিতাটি জনপ্রিয়তা পায় গোটা আমেরিকাজুড়ে।

১৮৮১ সালে কার্টুনিস্ট থমাস নাস্টের আঁকা একটি ছবি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায়, শান্তা ক্লজ হরিণ টানা গাড়িতে চড়ে কাঁধে ঝোলা নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাচ্চাদের উপহার দিচ্ছেন।

এভাবেই সারা বিশ্বজুড়ে ক্রিসমাসের আগের রাতে বাচ্চাদের ঝোলানো মোজা উপহারে পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ার রীতিটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশ সময়: ০০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।