ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যৌন হয়রানি প্রতিরোধের হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন জরুরি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
যৌন হয়রানি প্রতিরোধের হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন জরুরি 

ঢাকা: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বর্তমানে ৭১ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং ৩৯ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি থাকলেও কার্যকর মাত্র ৪৪ শতাংশ।

তাই নারীর প্রতি যৌন নির্যাতন ও হয়রানি প্রতিরোধে এই সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন জরুরি।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) ‘কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশিকা বাস্তবায়নের অগ্রগতি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিএনডব্লিউএলএ)।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনডব্লিউএলএ এর সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী। তিনি জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত গত ১০ মাসে দেশে ৩ হাজার ৬০ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নারী ও শিশু পাচারের ঘটনা ঘটেছে ৬৬টি। এর মধ্যে ১৮ জন কন্যাশিশু।

সালমা আলী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি ও ক্ষমতার অপব্যবহার প্রতিরোধে ২০০৮ সালে জনস্বার্থে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করে বিএনডব্লিউএলএ এর একজন সদস্য। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালে যুগান্তকারী রায় দেন হাইকোর্ট। কিন্তু এই রায়ের পর এক যুগ পেরিয়ে গেলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনার আশানুরূপ বাস্তবায়ন হয়নি। আইন কমিশনও বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারার কিছু অংশ সংশোধন করেছে। কিন্তু তারা এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা হলেও কার্যকারিতা অনেক কম। এমনকি শতকরা ১৯ ভাগ প্রতিষ্ঠান এই কমিটি গঠনের বিষয়ে কোনো তথ্যই দিতে পারেনি। ৫৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো অভিযোগ বাক্স।

এমন অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হয়রানী প্রতিরোধে বেশ কিছু সুপারিশ করেন মহিলা আইনজীবীরা

সুপারিশগুলো হলো- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশিকা অনুসারে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একটি যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন ও কার্যকরী করা; কমিটিগুলোর উদ্যোগ, সুযোগ এবং ক্ষেত্র সম্পর্কে গণসচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া, যাতে ভুক্তভোগীরা ভয় ছাড়াই তাদের ঘটনাগুলো বলতে পারে; রিপোর্টিং এবং প্রতিক্রিয়া প্রক্রিয়া কার্যকর করা; প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য একটি ছোট বাজেট বরাদ্দ করা; একটি জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং সাংগঠনিক স্তর থেকে প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য জেসমিন আরা, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) পরিচালক নাজমা ইয়াসমিন, বিএনডব্লিউএ-এর সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সীমা জহুর, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোবায়দা পারভীন ট্রেজারার জাকিয়া আনারকলি প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২

এসসি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।