ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

দুই শীর্ষ আমলার জন্য প্রস্তাবিত নতুন বাড়িতে হবে না সুইমিং পুল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২২
দুই শীর্ষ আমলার জন্য প্রস্তাবিত নতুন বাড়িতে হবে না সুইমিং পুল মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের জন্য নির্মাণাধীন নতুন বাড়িতে হবে না সুইমিং পুল। বিষয়টি পরিষ্কার করে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি বলেন, আলাদা না হলেও সবার জন্য কমন কোনো সুইমিং পুল নির্মাণ করা যায় কিনা সে বিষয়ে ভেবে দেখা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ওই এলাকায় যাদের অ্যালটমেন্ট (বাড়ি বরাদ্দ) আছে, তারা ও তাদের সন্তানরা সেখানে সাঁতার কাটার সুযোগ পাবেন বলে জানান তিনি।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

প্রসঙ্গত, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের জন্য রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পাশাপাশি নির্মিত হবে দুটি বাসভবন। প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুসারে প্রতিটি ভবন হবে তিন তলা। এর মধ্যে প্রতিটি বাসভবনে দুই সেট সুইমিং পুল নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছিল।

কিন্তু বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সরকার যখন দেশবাসীকে কৃচ্ছ্রসাধনের পরামর্শ দিচ্ছে ঠিক সে সময় এ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। এ নিয়ে হচ্ছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই জনপ্রশাসনের শীর্ষ দুই কর্মকর্তার জন্য ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাড়িটা যাতে এয়ারমার্কড (নির্দিষ্ট) করে দেওয়া হয় সে জন্য এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গণপূর্ত অধিদফতরের (পিডব্লিউডি) বক্তব্য হলো আস্তে আস্তে মিন্টো রোডের সব বাড়ি এরইমধ্যে ডিমোলিশড (ধ্বংস) করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এগুলো খুবই পুরনো। এগুলো মুখ্যসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাড়ির বিষয় না, সব বাড়িগুলো আস্তে আস্তে ভেঙে ফেলা হবে।

সংসদ উপনেতার বাড়ি এরই মধ্যে ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কারণ এগুলো সেই ১৯৪০-১৯৪৫ সালের বাড়ি। বাড়িগুলো একটা একটা ভেঙে সব নতুন করে তৈরি করা হবে। এটা নতুন বাড়ি করা বলার চেয়ে প্রধানত যে জায়গাটায় জোর দেয়া উচিত ছিল, তা হচ্ছে, যেহেতু মুখ্যসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাসায় অফিস আছে, সেহেতু তাদের বাসাটা যাতে এয়ারমার্কড করে দেওয়া হয়। একটা একটা করে সব বাড়িই নতুন করে নির্মাণ করা হবে। আর এটি ছিল একটি প্রাথমিক বিষয়, এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কিছু আসেওনি।

তিনি বলেন, আর কোনো ধরনের সুইমিং পুলের কথা পরিষ্কার করে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যদি সুইমিং পুল করতেই হয়, তাহলে ওখানে কয়েশ বাড়িঘর আছে, তাদের জন্য একটি সুইমিং পুল করা যায় কিনা। কারণ সুইমিং পুল তো রক্ষণাবেক্ষণও খুবই কঠিন। বাড়িতে বাড়িতে সুইমিং পুল করে রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে না। ওখানে যে ৫০০-৬০০ কর্মকর্তা আছেন, তাদের সবার জন্য কমন কোনো সুইমিং পুল নির্মাণ করা যায় কিনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সেখানে যাদের অ্যালটমেন্ট (বাড়ি বরাদ্দ) আছে, তারা ও তাদের সন্তানরা ওখানে সাঁতার কাটার সুযোগ পাবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এসব বিষয় আলোচনায় এসেছে তিন-চার বছর আগে। আর তা নির্দিষ্ট করে কারও বাড়ি করার জন্য না। এমনকি ইস্কাটন গার্ডেন অফিসার্স কোয়ার্টারে যে ছয়টি বড় ভবন আছে, সেগুলোও ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো সেই ১৯৫০ সালের বাড়ি। আসলে সবগুলোই নতুন করে নির্মাণ করতে হবে।

এর আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের জন্য ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বাসভবন নির্মাণের একটি প্রকল্প গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়ে। প্রকল্পটির ব্যয় ৫০ কোটি টাকার নিচে হওয়ায় পরিকল্পনামন্ত্রী নিজ ক্ষমতাবলে এটি অনুমোদন করতে পারবেন।

প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুসারে, প্রতিটি ভবন হবে তিন তলা, সাড়ে ১৮ হাজার বর্গফুটের। প্রতিটি ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে সাড়ে ২১ কোটি টাকা করে। এর মধ্যে প্রতিটি বাসভবনে দুই সেট সুইমিং পুলের প্রস্তাব করা হয়েছে। যাতে সম্ভাব্য খরচ ধরা হয়েছে ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১,২০২২
জিসিজি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad