ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বসতঘরে আগুনে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু, দগ্ধ মা-ভাই

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২২
বসতঘরে আগুনে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু, দগ্ধ মা-ভাই

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বসতঘরে আগুন লেগে আনিকা আক্তার (১৮) নামে এক অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দগ্ধ হয়েছেন তার মা জোসনা বেগম (৪০) ও ছোট ভাই রুপম (৯)।

 

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রাত ১টার দিকে সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। দগ্ধ দুইজনকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠালে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।  

নিহত আনিকা ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার স্বামীর নাম মো. রতন। বাবার নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি সৌদি প্রবাসী। আনিকা স্থানীয় গোপালপুর দারিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। ৮ মাস আগে তার বিয়ে হয়।  

বুধবার (১২ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের সদর স্টেশন অফিসার রণজিৎ কুমার সাহা।

তিনি বলেন, রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা একজনের পোড়া মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশকে বুঝিয়ে দেই। দগ্ধ আরও দুইজনকে হাসাপাতালে পাঠায়। আমরা যাওয়ার আগেই স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।  

বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় কয়েকজন বলেছে, কেউ ঘরে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে।  

নিহত আনিকার ফুফু শেফালী বেগম বাংলানিউজকে বলেন, আমার ভাই আনোয়ার সৌদীতে থাকেন। রাতে তার স্ত্রী জোসনা বেগম, ছেলে রিফাত (২০) মেয়ে আনিকা ও ছোট ছেলে রুপম ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের পর তিনজন ঘর থেকে বের হতে পারলেও অনিকা বের হতে পারেনি। সে ঘরের ভেতরে পুড়ে মারা গেছে।  

আগুন নেভাতে আসা আনিকার চাচা কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রাতে আমরা আগুন নেভাতে আসি। আমার ভাতিজা রিফাত এবং তার মা জোসনা ছোট ছেলে রুপমকে নিয়ে ঘরে থেকে বের হতে পারলেও অনিকা বের হতে পারেনি। আগুন নেভানোর পর তার পোড়া কঙ্কাল পাওয়া যায়। আমার ভাবি জোসনা ও ভাতিজা রুপম আহত হয়েছে।  

এদিকে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পরে পরিবারকে ৬০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করেন জেলা প্রশাসক।  

জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বাংলানিউজকে বলেন, এটি একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা। আগুনে পুড়ে একটি মেয়ে মারা গেছে। তার মার শরীরও অনেকটা পুড়ে গেছে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পরিবারের পাশে আছি। তাদের আর্থিক সহায়তাসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করা হবে।

পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কি কারণে আগুন লেগেছে তা খতিয়ে দেখা হবে। আগ্নিকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।