ঢাকা: ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের টাকা উত্তলনকারী কিংবা টাকা বহনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করতো তারা। ডিবি পুলিশের জ্যাকেট সদৃশ্য পোশাক পরা অবস্থায়, হাতে ওয়াকিটকি সেট ও হ্যান্ডকাপ নিয়ে ভাড়া করা মাইক্রোবাসে হাজির হতো টার্গেট ব্যক্তির কাছে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অভিনব এমন ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৬ ভুয়া ডিবিকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০)।
আটকরা হলেন- সবুজ খাঁন (৪৬), মিন্টু পাটোয়ারী (৪০), রাসেল মোল্লা (৪৫), ইকবাল মিয়া (৩৯), মনিরুল ইসলাম (৪০) ও খোকন মিয়া (৪৫)।
তাদের কাছ থেকে ৩টি ভুয়া ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, ২টি ওয়াকিটকি সেট, ১টি হাতকড়া, ১টি খেলনা পিস্তল, ১টি হ্যান্ড ফ্লাশ লাইট, ১টি পুলিশ মনোগ্রাম সম্বলিত স্টিকার, ৭টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১০ হাজার ৯৫০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্য। নিজেদের ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, গুলিস্থান, মতিঝিল, বাইতুল মোকারমসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিলো। ব্যাংক থেকে মোটা অংকের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকা নিয়ে চলাচলকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করছিলো তারা।
তিনি বলেন, আটক সবুজ এ চক্রের মূলহোতা। এ কাজের জন্য গ্রেফতার রাসেল ব্যাংক ও জনবহুল এলাকায় অবস্থান করে ভিকটিম নির্দিষ্ট করে ভিকটিমকে অনুসরন করতেন এবং ভিকটিমের বর্ণনা ও অবস্থান সম্পর্কে তাদের সমন্বয়ক মিন্টুকে জানাতেন।
পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী সহযোগীরা মিলে ডিবি পুলিশের জ্যাকেট সদৃশ্য পোশাক পরা অবস্থায়, হাতে ওয়াকিটকি সেট ও হ্যান্ডকাপ নিয়ে ভাড়া করা মাইক্রোবাসযোগে ভিকটিমের কাছে উপস্থিত হতো। ভিকটিম কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে মাদক কারবারি বা মামলার আসামিসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা মাইক্রোবাসে উঠিয়ে মারধর করতো। এরমধ্যে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে অন্য স্থানে চলে যেত তারা। পরবর্তীতে ভিকটিমের কাছে থাকা টাকা, মোবাইল ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সব জিনিসপত্র নিয়ে ভিকটিমকে সুবিধাজনক স্থানে মাইক্রোবাস থেকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যেত।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মূলহোতা সবুজ ডাকাতির জন্য প্রয়োজনীয় ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, ওয়াকিটকি, হাতকড়া, খেলনা পিস্তল সরবারহ করতেন। মিন্টু পাটোয়ারী পেশায় একজন ছদ্মবেশী সিএনজি ও অটো-রিক্সাচালক। এই পেশার আড়ালে তিনি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ডাকাতির জন্য তথ্য সংগ্রহ করতেন। রাসেল মোল্লা পেশায় একজন গাড়িচালক। তিনি তার এই পেশার আড়ালে ডাকাত দলের গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করতেন।
আটক ইকবাল মিয়া ডাকাতির জন্য সবুজের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি প্রায় ৩ বছর ধরে এই দলের সঙ্গে যুক্ত। মনিরুল ইসলাম (৪০) পেশায় একজন দর্জি। গত ১ বছর ধরে দর্জি পেশা ছেড়ে ডাকাত দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মিন্টুর সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২২
পিএম/এসএ