ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জলবায়ু সমঝোতা আলোচনায় বাংলাদেশের ভূমিকা যথেষ্ট দূর্বল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২২
জলবায়ু সমঝোতা আলোচনায় বাংলাদেশের ভূমিকা যথেষ্ট দূর্বল কর্মশালা। ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: জলবায়ু সমঝোতা আলোচনায় বাংলাদেশ যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।  

তাদের মতে, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ, কিন্তু জলবায়ু সমঝোতা আলোচনায় বাংলাদেশের ভূমিকা যথেষ্ট দূর্বল।

 
 
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার মাহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স হলে সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং আরও কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক রিপোর্টিং দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ এবং আসন্ন কপ-২৭ এ নানা মাত্রিকভাবে অংশগ্রহণ এবং ভূমিকা রাখার সুযোগগুলো নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য দিনব্যাপী এক কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন।

উদ্বোধনী অধিবেশনে মূল বক্তব্য তুলে ধরে সি.পি.আর.ডি’র নির্বাহী প্রধান মো. শামসুদ্দোহা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার করণীয় নির্ধারণে বৈশ্বিক সমঝোতা আলোচনা বরাবরই একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে এই সমঝোতা আলোচনায়ও নতুন নতুন মাত্রা যুক্ত হচ্ছে।

বৈশ্বিক নাগরিক সমাজ ও পরিবেশ সচেতন মানুষের চাপ এবং বিভিন্ন গবেষণা ফলাফলের ভিত্তিতে কপ-২৬ রাষ্ট্রসমূহকে তাদের কার্বন উদগীরণ হ্রাসকরণ এর লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়াতে বলে। এটি এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিত যে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সবচেয়ে কার্যকর পন্থাটি হচ্ছে কার্বন (গ্রিন হাউস গ্যাস) উদগীরণ হ্রাস করা।  

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্র এবং অঞ্চলসমূহের ক্ষয়-ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার একটি আনুষ্ঠানিক মেকানিজম প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এবারের সম্মেলনে। এছাড়া ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবিলায় অভিযোজন স্বল্পতার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি কমাতে জলবায়ু অর্থায়নের নিম্নপ্রবাহকে বৃদ্ধিকরণেরও সুযোগ তৈরি হয়েছে। যাবতীয় কারণে বাংলাদেশের মতো অতিমাত্রায় বিপদাপন্ন রাষ্ট্রসমূহের জন্য কপ-২৭ অনেক বড় সুযোগ নিয়ে এসেছে।  

শামসুদ্দোহা বলেন, আমরা যদি সুযোগগুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে চাই এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রয়োজনীয়তা ও ক্ষয়ক্ষতিগুলো তুলে ধরতে চাই তাহলে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।  

কর্মশালায় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ, কিন্তু জলবায়ু সমঝোতা আলোচনায় বাংলাদেশের ভূমিকা যথেষ্ট দূর্বল। আমাদের জলবায়ু নেগোশিয়েটরের সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকজন, আমরা এত বছরেও একটি দক্ষ নেগোশিয়েটর গ্রুপ দাঁড় করাতে পারিনি।

এ বিষয়ে সরকার এবং উন্নয়ন সহযোগীদের যৌথভাবে কাজ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।  

তিনি বলেন, প্রতিবছর  সমঝোতা সম্মেলনস্থলে বাংলাদেশের চমৎকার একটি প্যাভিলিয়ন থাকে, কিন্তু আমরা দেখেছি আমাদের সেই প্যাভিলিয়নটি দিনের বেশিরভাগ সময়ই ফাঁকা পড়ে থাকে, আমরা যদি সেই প্যাভিলিয়নটি সিভিল সোসাইটি সংগঠনগুলোর ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারতাম তাহলে বাংলাদেশের সমস্যা এবং সংকটগুলোকে আরও বেশি দৃষ্টিগোচর করানো যেত।  

তিনি আরও বলেন, সমঝোতা সম্মেলনটি ৯-১০ দিনব্যাপী হলেও আমাদের কপ শেষ হয়ে যায় প্রথম দুই তিন দিন পরেই! প্রধানমন্ত্রী দেশে চলে এলেই আমাদের সব তৎপরতায় ভাটা পড়ে যায়।  

শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের সামনে হাজারো সমস্যা নিয়ে হাজির হয়েছে, এখন আমাদের উচিত এই সমস্যগুলোকে হাজারো কণ্ঠে হাজারভাবে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে উপস্থাপন করা।  

জলবায়ু সমঝোতা আলোচনায় এবং বৈশ্বিকভাবে আমাদের সমস্যা এবং সংকটগুলো তুলে ধরতে আমাদের কোনো কর্মকৌশল নেই বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, ওয়াটার অ্যাইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর  হাসিন জাহান, ডিয়াকোনিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর খোদেজা সুলতানা লোপা।  

টেকনিক্যাল সেশনগুলো পরিচালনা করেন ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ডের প্রধান ড. গোলাম রাব্বানি, পল্লি কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহম্মেদ, সি.পি.আর.ডি’র নির্বাহী প্রধান মো শামসুদ্দোহা, সি.পি.আর.ডি’র প্রকল্প সমন্বয়কারী আকিব জাবেদ এবং রিসার্চ অফিসার শেখ নূর আতায়ে রাব্বি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২২
এসএমএকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।