ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রহিমা ‘নিখোঁজে’ জড়িতদের শাস্তি ও আটকদের মুক্তির দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২
রহিমা ‘নিখোঁজে’ জড়িতদের শাস্তি ও আটকদের মুক্তির দাবি

খুলনা:  খুলনার বহুল আলোচিত মহেশ্বরপাশা খানাবাড়ীর রহস্যজনক নিখোঁজ রহিমা বেগমের কথিত অপহরণের মামলায় কারাগারে আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিঃশ্বর্ত মুক্তি এবং নিখোঁজের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘণ্টাব্যাপী খুলনা যশোর মহাসড়কের ফুলবাড়ীগেট বাসষ্টান্ড চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মো. আলামিন হাওলাদারের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. সাইফূল ইসলাম, ফুলবাড়ী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুল ইসলাম, খানাবাড়ী যুব সংঘ ক্লাবের সভাপতি আবু হেনা বাবলু, সাধারণ সম্পাদক তৈয়বুর রহমান লিটন, মহানগর বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিজান, এনামুল হাসান ডায়মন্ড, ইউপি সদস্য মো. মামুন শেখ, সাবেক ইউপি সদস্য সরদার শহিদুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য মোল্যা সোহরাব হোসেন, বিল্লাল হোসেন, আটক মহিউদ্দিনের মেয়ে মালিহা মহিউদ্দিন মাহি, হেলাল শরীফের কন্যা অন্তরা ফাহমিদা, পলাশের স্ত্রী মরিয়ম হাসান মৌ, মরিয়ম মান্নানের সৎ ভাই মিজানুর রহমান ও হুমাউন কবির, আমজিয়ার রহমান, সেকেন্দার মন্ডল, মশিউর রহমান, মেজবাউল হক মেজবা, সোহান, রাজু সরদার, মেহেদী হাসান, সোহেলসহ মহেশ্বরপাশা খানাবাড়ী এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।  
মানববন্ধনে পরিকল্পনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আটককৃতদের দ্রুতমুক্তির দাবি সম্বলিত ব্যানার, প্লাকাট ও ফেষ্টুন নিয়ে এলাকার সকল দলমত, নারী-পুরুষ, শিশু কিশোর আবালবৃদ্ধ, সামাজিক, রাজনৈতিক, সুশিল সমাজ, বৈশিষ্ট ব্যক্তিরাসহ সর্বস্থরের মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রহিমা বেগম নিখোঁজের ঘটনা তার মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ পরিবারের সদস্যরা কিভাবে পরিকল্পনা করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে তা ইতোমধ্যে দেশের মিডিয়াগুলোর মাধ্যমে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী দেখেছে। রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ স্বজনরা পরিকল্পিত ঘটনা সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর এর দায় চাপিয়ে হুংকার দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থাকে মরিয়ম মান্নান গং বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে ফায়দা লুটতে চেয়েছিল।

বক্তারা বলেন, তথাকথিত নিখোঁজের নাটক সাজিয়ে তারা দেশের এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। যে মুহুর্তে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে গুম অপহরণ নিয়ে বিশ্ব মোড়লরা দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে আঙ্গুল তুলেছে ঠিক সেই মুহুর্তে এ ধরনের একটি ঘটনার সৃষ্টি করে নতুন করে দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তারা।

আটকদের পরিবারের স্বজনরা তাদের বক্তৃতায় বলেন, মানুষের আবেগ  নিয়ে যারা খেলা করেছে, ১৭ কোটি মানুষের আবেগ নিয়ে যারা খেলল তাদের বিচার না হলে এমন অনেক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।

মানববন্ধনে বক্তারা বহুল আলোচিত রহিমা বেগম নিখোঁজের ঘটনার সঙ্গে জড়িত পরিকল্পনাকারী মরিয়ম মান্নান, আদুরী আক্তার, মিরাজ হোসেন সাদীসহ ষড়যন্ত্র্রকারীদের গ্রেফতার পুর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং কথিত অপহরণ মামলায় একমাস যাবত কারাগারের থাকা নির্দোষ মহিউদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, জুলেয়, পলাশ ও হেলাল শরীফের দ্রুত নিশ্বর্ত মুক্তির দাবি করেন। মানববন্ধন থেকে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আটকদের মুক্তি না দিলে একই দাবিতে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।

উল্লেখ্য, মহেশ্বরপাশা খানাবাড়ী গ্রাম থেকে গত ২৭ আগস্ট রাতে রহিমা বেগম নিখোঁজ হলে তার মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে ২৮ আগস্ট দৌলতপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করে। ইতোমধ্যে রহিমা বেগমকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত ২৪ সেপ্টেম্বর জীবিত ও অক্ষত অবন্থায় উদ্ধার করে ঘটনার রহস্য প্রায় উন্মোচন করেছে। কিন্তু জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে ঐ মামলায় প্রতিবেশী হেলাল শরীফকে গত ৩০ আগস্ট, প্রতিবেশী কুয়েটের সহকারী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়র মো. গোলাম কিবরিয়া. ব্যবাসায় মহিউদ্দিন, ব্যাবসায়ী জুয়েল ও সরকারি চাকুরীজীবি রফিকুল ইসলাম পলাশকে পুলিশ ডেকে নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর এবং সর্বশেষ নিখোজ রহিমা বেগমের স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওরফে বেল্লাল ঘটককে ১২ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতার রহিমা বেগমের স্বামীসহ মোট ৬ জন এখন পর্যন্ত কারাগারে রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২
এমআরএম/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।