ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দুঃখের সময় ইন্ডিয়া আমাদের পাশে থাকে: শেখ হাসিনা

মহিউদ্দিন মাহমুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২
দুঃখের সময় ইন্ডিয়া আমাদের পাশে থাকে: শেখ হাসিনা

হায়দ্রাবাদ হাউজ, নয়াদিল্লি থেকে: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর নির্বাসিত জীবনের কথা স্মৃতিচারণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সব সময় আমাদের দুঃখের সময় ইন্ডিয়া আমাদের পাশে থাকে।

মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হায়দ্রাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক এবং দুই দেশের মধ্যে ৭টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার পর দেওয়া প্রেস বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত দীর্ঘদিনের বন্ধু। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের যে সহযোগিতা আমরা পেয়েছি, ১৯৭৫ সালে যখন বাবা-মা-ভাই সব হারিয়ে আমরা দুই বোন অসহায়—এই ইন্ডিযাতেই আমরা আশ্রয় পেয়েছিলাম। শুধু আমি না, আমাদের পরিবারের আরও যারা আপনজন হারিয়ে, কেউ গুলিতে আহত অবস্থায় এখানেই আশ্রয় নিয়েছিল। কাজেই সব সময় আমাদের দুঃখের সময় ইন্ডিয়া আমাদের পাশে থাকে।

তিনি বলেন, রিফিউজি হিসেবে ছিলাম সেই স্মৃতি মনে পড়ে। তখনও সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছি। কাজেই এই ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক।

দুই দেশের মধ্যকার সুসম্পর্ক এবং আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন অমীমাংসিত ইস্যু সমাধানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দুই প্রতিবেশী দেশ ইতোমধ্যে অনেক সময় অনেক কিছু বিষয় আমরা নিজেরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সেগুলো আমরা সমাধান করতে পেরেছি।

অবশিষ্ট অমীমাংসিত ইস্যুগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, কাজেই আমরা দুই প্রতিবেশী আমরা যেকোনো সমস্যা... প্রতিবেশীদের সাথে সমস্যা থাকতে পারে কিন্তু সেগুলো আলাপ আলোচনার মধ্যে সমাধান করা যায়, সেটার দৃষ্টান্ত আমরা দেখিয়েছি এবং ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদিজির ভাষণে আপনারা সেটা পেয়েছেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, কাজেই আমি মনে করি বন্ধুপ্রতীম দেশ, আমরা দুই দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, দারিদ্র্য বিমোচন করা, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করা এবং শুধু আমাদের দুই দেশ না দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সকল এলাকা মিলেই যেন এই অঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে আরও উন্নত হোক, সমৃদ্ধশালী হোক এবং সবাই উন্নত জীবন পাক সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেটা আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও উন্নত করবে। আমাদের দুই দেশের মানুষের আরও উন্নতি হবে। সেই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার পর হায়দ্রাবাদ হাউজে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অভ্যর্থনা জানান।

ফটোসেশনে অংশগ্রহণের পর দুই প্রধানমন্ত্রী রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন। একান্ত বৈঠকের পর দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন দুই প্রধানমন্ত্রী।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সম্মানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।

বিকেলে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে উপরাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

সফরের দ্বিতীয় দিন সকালে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লি আসেন প্রধানমন্ত্রী। সফর শেষে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফিরবেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২২
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।