ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

দ্বার খুলেছে বেকুটিয়ার বঙ্গমাতা সেতুর

খুলনা-বরিশালের নয়া সংযোগে উচ্ছ্বাস ১৬ জেলায়

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২
খুলনা-বরিশালের নয়া সংযোগে উচ্ছ্বাস ১৬ জেলায়

খুলনা: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পিরোজপুরে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রি সেতুটির দ্বার খুলেছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দুই মাস নয় দিন পর রোববার (৪সেপ্টেম্বর) দক্ষিণাঞ্চলের এ সেতুটি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা সড়কের বেকুটিয়ায় কচা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি চালুর মধ্য দিয়ে নতুন মাত্রা যোগ হলো খুলনা ও বরিশালের যোগাযোগ ব্যবস্থায়।

শুধু তাই নয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগেরও একটি নতুন মাত্রা যোগ হলো। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ও বহু কাঙ্ক্ষিত এ সেতু চালু হওয়ায় আনন্দ উচ্ছ্বাসে ভাসছে দুই বিভাগের ১৬ জেলার কোটি কোটি মানুষ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেতুটি খুলনা ও বরিশাল দুই বিভাগকে এক করে দিয়েছে। সেতুটি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দর এবং বেনাপোল ও বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরকে সরাসরি সড়ক পথে সংযুক্ত করেছে।

মঠবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মামুন হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সেতু চালুর মাধ্যমে ভোগান্তির অবসান ঘটেছে। আগে আমাদের বেকুটিয়া ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হতো। অনেক সময় অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন জরুরি যানবাহন ফেরি না পাওয়ায় ঘাটেই অনেক সময় আটকে থাকত। বিশেষ করে বৈরী আবহাওয়ায় যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারতো না অনেক মাছ ও সবজিবাহী যানবাহন। পচনশীল পণ্য হওয়ায় তখন এসব মাছ ও সবজির মান ও দাম দুটিই কমে যেত। লোকসানে পড়তে হতো কৃষক জেলে ও ব্যবসায়ীদের। সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের দুয়ার উন্মুক্তের পাশাপাশি এ অঞ্চলের কৃষিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

খুলনার কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্সের পরিচালক মো. আবু মুছা বাংলানিউজকে বলেন, মৎস্যসম্পদে বরাবরই সমৃদ্ধ ধান-নদী-খালের বরিশাল। অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে মৎস্য সেক্টর। মৎস্য বিভাগের হিসাব মতে, দেশে উৎপাদিত মোট ইলিশের ৬৬ ভাগেরই জোগান দেয় বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা। সেতুর কল্যাণে বরিশাল অঞ্চলের নদ-নদী থেকে তাজা ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মো. মফিদুল ইসলাম টুটুল বাংলানিউজকে বলেন, সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোটি কোটি হৃদয়ের আরও একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। দূর হচ্ছে বরিশাল-খুলনার সড়ক যোগাযোগে দীর্ঘ কালের ফেরি সংক্রান্ত সকল প্রতিবন্ধকতা। সেতুটি বরিশাল শহরের সঙ্গে পিরোজপুরের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করেছে এবং এর মাধ্যমে বরিশালের সঙ্গে খুলনার যোগাযোগ সহজ হয়েছে।

সর্বোপরি এ সেতু চালু হওয়ার মাধ্যমে সাগরকন্যা কুয়াকাটা এবং বিশ্বের অন্যতম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের ফলে এ অঞ্চল দেশ-বিদেশের পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে। গভীর সমুদ্রবন্দর পায়রার সঙ্গে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা ও সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২
এমআরএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।