ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঠিকাদারের গাফিলতি: ৪ বছরেও শেষ হয়নি বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
ঠিকাদারের গাফিলতি: ৪ বছরেও শেষ হয়নি বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে ঠিকাদারের গাফিলতিতে চার বছরেও শেষ হয়নি মনোয়ারা সিকদার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ। পুরাতন ভবনের জরাজীর্ণ কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন শিক্ষকরা।

আর শিক্ষার্থীদেরও থাকছে হচ্ছে ঝুঁকিতে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগসহ নানাভাবে যোগাযোগ করেও মেলেনি কোনো সুফল।

বিদ্যালয় সূত্রে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মনোয়ার শিকদার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৩০ জন। বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে একটি উর্ধ্বমুখী দ্বিতল ও তিনতলা ভবন নির্মাণ করতে বলা হয়। এ জন্য ১ কোটি ১৮ লাখ ৪২ হাজার ২৩২ টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর পর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

পরে মাদারীপুরের মেসার্স ইলিয়াস আহমেদ কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেই ভবন নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়। তখন প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করার চার বছর অতিবাহিত হয়ে এখনও বাকি আছে প্রায় ৪০ ভাগ কাজ। ভবন নির্মাণে এত দীর্ঘ সময় লাগায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৯ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ একটি ভবনে ও একটি টিনশেড কক্ষে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। স্কুলের মাঠে ও ভবনের কক্ষের সামনে পড়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী।

ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিম আক্তার বলেন, এতদিনেও নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। এ কারণে জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনে গাদাগাদি করে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। একটি ক্লাস হচ্ছে টিনশেডের রুমে আর আরেকটি হচ্ছে পুরাতন ভবনে। ওই ভবনে রুমের জানালা নেই, ফ্যান নেই, প্রচণ্ড গরম, ঝড় বৃষ্টি হলে পানি পড়ে কিন্তু তারপরেও সেখানেই ক্লাস করতে হচ্ছে। এতে আমাদের পাশাপাশি স্যারদেরও অনেক সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুতই নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য বার বার অনুরোধ করছি। জরাজীর্ণ পুরাতন ভবন আর টিনসেট কক্ষে ক্লাস নিতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। এছাড়া সেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। আর মাঠে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় শিক্ষার্থীরা সেখানে খেলাধুলাও করতে পারছে না।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, সমস্যা উত্তরণে আমি ঠিকাদারকে কয়েক দফা লিখিত অভিযোগসহ ফোন করেছি। কিন্তু কোনো ফল পাচ্ছি না। চার বছরেও ভবন নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অবিলম্বে নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইলিয়াস আহমেদ কনস্ট্রাকশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী এটিএম জাহিদ বলেন, সঠিক সময়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ হ্যান্ডওভার না করায় জরিমানা করা হয়েছে। আমরা ওই প্রতিষ্ঠানকে অফিসে ডেকেছিলাম। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আর প্রতিষ্ঠানটি কাজের অনেকাংশ করে ফেলায় রি-টেন্ডারের সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।