ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পঞ্চগড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
পঞ্চগড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ

পঞ্চগড়: হঠাৎ দুই শ্রমিক ইউনিয়ন লোড-আনলোড খরচ বৃদ্ধি করায় পঞ্চগড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা করেছে পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশন। এ ঘোষণা শনিবার (২৭ আগস্ট) সকাল থেকে কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাতে পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশনের সভাপতি হাসিবুল হক প্রধান বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে সন্ধ্যায় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর পাথর-বালু ব্যবসায়িক সমিতির অফিস কার্যালয়ে পাথর ব্যবসায়ী ও মালিকসহ সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে আলোচনা শেষে রাতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলেও জানান তিনি।

জানা যায়, পঞ্চগড় জেলায় দীর্ঘদিন ধরে পাথর-বালু লোড-আনলোডে সেফটি প্রতি ২ টাকা ৮০ পয়সা করে শ্রমিকদের দিয়ে আসতো মালিকরা। এদিকে গত ১০ আগস্ট জেলা ট্রাক, ট্রাক্টর, ট্যাংকলরি ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন ২০০০ ও পঞ্চগড় জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ২৬৪-এর সভাপতি লোড-আনলোডের দাম বৃদ্ধির জন্য পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু জেলা প্রশাসক কর্তৃক ব্যবসায়ীদের ও যৌথ ফেডারেশনকে নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ার আগেই শ্রমিক ইউনিয়ন ২০০০ ও ২৬৪ গত ২০ আগস্ট থেকে জোর পূর্বকভাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২ টাকা ৮০ পয়সার বিপরীতে ৫ টাকা ৫০ পয়সা করে নেওয়া শুরু করে। এতে ব্যবসায়ীরা যৌথ ফেডারেশনের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা শেষে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশন লোড-আনলোড দাম ঠিক না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলায় সব প্রকার পাথর ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা করে।

জেলা পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশনের সভাপতি হাসিবুল হক প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, সবকিছুর একটা নিয়ম থাকে। কিন্তু তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা না বলেই একাই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তাই এর প্রতিবাদে এবং জেলা প্রশাসন কর্তৃক সবকিছু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত শনিবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ রাখা হবে।

পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালু ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারী সমিতির দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রউফ বাংলানিউজকে বলেন, পঞ্চগড়ের ওই দুই শ্রমিক সংগঠন (২০০০ ও ২৬৪) জেলা প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে মনগড়াভাবে দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জোর পূর্বক টাকা নেওয়া শুরু করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। মূলত শ্রমিকরা একটা মালিক/ব্যবসায়ীদের অধীনে কাজ করে। তারা যাই করুক মালিকদের জনাবেন। তাদের সংগঠনের রেজুলেশনে বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এ দুই সংগঠন সবকিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে একটা খারাপ পরিস্থিত সৃষ্টির জন্য ভিন্ন রূপ দেখাচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে শ্রদ্ধা করি। তাই জেলা প্রশাসকের একটা সুষ্ঠু ও সঠিক সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বিশৃঙ্খলা না সৃষ্টি করার জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

হঠাৎ লোড-আনলোডে দাম বৃদ্ধির বিষয়ে শ্রমিক সংগঠন ২৬৪-এর সভাপতি আব্দুল লথিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে শ্রমিকদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। দীর্ঘদিন থেকে শ্রমিকরা লোড খরচ বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিল। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক বরাবর কয়েক দফা আবেদন করে গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) থেকে ৫ টাকা ৫০ পয়সার পরিবর্তে ৪ টাকা নেওয়া শুরু করেছি। তবে এর মধ্যে যদি তারা পাথর ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করে দেয় তাতে আমাদের সংগঠনের করার কিছু নেই। আর এদিকে যদি শ্রমিকরা ৪ টাকার কমে কাজ করে তবে সেটা তারা বুঝবে। মূলত শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এ দাম নিচ্ছি।

শ্রমিক ইউনিয়ন ২০০০-এর সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমে তেঁতুলিয়া লেবার শ্রমিক ইউনিয়ন দাম বৃদ্ধির আবেদন করে। এর পর ভজনপুর লেবার শ্রমিক ইউনিয়ন। পরে আমাদের ইউনিয়নের শ্রমিকরা শ্রমের দাম বৃদ্ধির আবেদন করে। তাই আমরা যৌথ ফেডারেশন ও জেলা প্রশাসনকে অবগতসহ লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছি।

এদিকে শ্রমিক সংগঠনের (২০০০ ও ২৬৪) আবেদনের বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) জহুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আবেদনের পর এখনো কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। এ বিষয়ে কাজ চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।