ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ফরেনসিক প্রতিবেদনেও ৩ প্রবাসীর মৃত্যুর কারণ ‘অজ্ঞাত’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২২
ফরেনসিক প্রতিবেদনেও ৩ প্রবাসীর মৃত্যুর কারণ ‘অজ্ঞাত’

সিলেট: সিলেটের ওসমানীনগরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিবারের ৩ সদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় দুই জনের ফরেনসিক প্রতিবেদন পুলিশের হাতে এসে পৌঁছেছে। ফরেনসিক প্রতিবেদন খতিয়ে দেখতে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড কোনো ধরনের বিষক্রিয়া কিংবা আঘাতে মৃত্যুর কারণ পায়নি।

মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবেদন পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, নিহত ৩ জনের দু’জন এবং অসুস্থদের শরীরে কোনো বিষয়ক্রিয়া বা চেনতানাশক ব্যবহারের প্রমাণ মেলেনি, প্রতিবেদনে এমনটি উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া শরীরে বাহ্যিক বা ভেতরে কোনো আঘাতের চিহ্নও পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবদেনে এই ঘটনাকে ‘রহস্যজনক ও অজ্ঞাত’ কারণে মৃত্যু বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই অজ্ঞাত কারণ অক্সিজেন স্বল্পতায় হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাঈন উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রবাসী পরিবারের নিহত ৩ সদস্যের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মাইকুল ইসলামের ফরেনসিক প্রতিবেদন এসেছে। তবে নিহত রফিকুল ইসলামের মেয়ে সামিরা ইসলামের ফরেনসিক প্রতিবেদন এখনো আসেনি।

তিনি বলেন, দু’দিন আগে এই প্রতিবেদন খতিয়ে দেখতে ওসমানী হাসপাতালে বোর্ড গঠন করা হয়। অধ্যাপক ডা. শিশির চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড মারা যাওয়া বাবা-ছেলের ও অসুস্থ হওয়া আরও দুজনের শরীরে কোনো চেনতানাশক বা খাদ্য বিষক্রিয়ার কোনো প্রমাণ পায়নি।

গত ২৫ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন প্রবাসী পরিবারের ৫ সদস্য। পরদিন ২৬ জুলাই ৯৯৯ নম্বরে ফোন কল পেয়ে বাসার দরজা ভেঙে তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

হাসপাতালে নেওয়ার পর যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫৫) ও তার ছেলে মাহিকুল ইসলামকে (১৮) মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ঘটনার ১১ দিন পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা মেয়ে সাদিয়া ইসলামও মারা যান। আর হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফেরেন নিহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনারা বেগম (৪৫) ও ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫)।

গত ২৩ আগস্ট এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন বলেন, ৩ প্রবাসীকে হত্যা করা হয়নি বা খাদ্যে বিষয়ক্রিয়ায় তারা মারা যাননি। এটি একটি দুর্ঘটনা। রাতে বাসায় চলা জেনারেটরের ধোঁয়াতে তাদের মৃত্যু হয়েছে, এমনটি তার ধারণা।

পুলিশ সুপারের মতে, ওই প্রবাসী পরিবার যে বাসায় ভাড়া থাকতেন, নিজেদের ফ্ল্যাটের জন্য তারা আলাদা একটি জেনারেটর ব্যবহার করতেন। সাধারণত জেনারেটর বাড়ির বাইরে চালানো হয়। তবে ওই প্রবাসী পরিবার জেনারেটরটি তাদের ফ্ল্যাটের ভেতরে চালিয়েছিলেন। এতে জেনারেটরের ধোঁয়া নন ভেনটিলেশন শয়নকক্ষে প্রবেশ করেছিল। তাতে অক্সিজেন সংকট হয়ে তাদের মৃত্যু হতে পারে। জেনারেটরের ধোঁয়ার বাইরে আর কোনো ক্লু নেই।

পুলিশি তদন্তে ও নিহতের স্ত্রী-সন্তানদের বক্তব্যে জানা গেছে ওই পরিবারের সঙ্গে জমিজমা কিংবা অর্থনৈতিক লেনদেন নিয়ে কারো কোনো বিরোধ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২২
এনইউ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।