ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

টিকে থাকতে আগের ভাড়াই নিচ্ছে পটুয়াখালী-ঢাকার সব লঞ্চ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
টিকে থাকতে আগের ভাড়াই নিচ্ছে পটুয়াখালী-ঢাকার সব লঞ্চ

মো. জহিরুল ইসলাম, পটুয়াখালী: জ্বালানি তেলের আচমকা দাম বৃদ্ধির কারণে সরকার নৌযানের ভাড়া ৩০ শতাংশ বাড়িছে। তবে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে ভাড়া বাড়ায়নি পটুয়াখালী-ঢাকাগামী রুটের লঞ্চ মালিকরা।

আগের নির্ধারিত ডেকের ভাড়া ৫০০ টাকা, সিঙ্গেল ১ হাজার ৩০০ টাকা এবং ডবল কেবিন ২ হাজার ৫০০ টাকা করেই নেবেন বলে জানিয়েছেন এ রুটের লঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

পদ্মা সেতু চালুর পর জনপ্রিয় নৌপথে আশঙ্কাজনক হারে যাত্রী কমেছে। এতে দক্ষিণাঞ্চলের একসময়ের লাভজনক লঞ্চ ব্যবসায় প্রায় ধস নেমেছে। তাই নিজেদের টিকিয়ে রাখতে আগের মতই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে লঞ্চে।

এদিকে যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণে যাত্রী সেবার মান বাড়ানো ও বাড়তি ভাড়ার চাপে না রাখার জন্য লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। তবে বুধবার (১৭ আগস্ট) বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।

গত ৫ আগস্ট রাত ১২টার পর থেক সরকারি ঘোষণা অনুযায় জ্বালানি তেলের দাম প্রতি লিটারে ডিজেল ও কেরোসিনে ৩৪ টাকা বেড়ে ১১৪ টাকা, অকটেনে ৪৬ টাকা বেড়ে ১৩৫ টাকা, পেট্রোলে ৪৪ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনে ৪৭ টাকা বেড়ে ১৩৫ টাকা হয়েছে।

এর প্রেক্ষিতে লঞ্চভাড়া ৩০ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। যা মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাত থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

এরপর ওইদিন সন্ধ্যা ৬টায় পটুয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে এমভি সুন্দরবন-৯ ও এমভি কুয়াকাটা-১ লঞ্চ ছেড়ে যায় এবং বুধবার (১৭ আগস্ট) ছেড়ে যায় এমভি প্রিন্স কামাল ও এমভি পূবালী-১২। তাবে, এ চারটি লঞ্চের একটিতেও বর্ধিত ভাড়া নেওয়া হয়নি। যদিও কিছুটা হের ফের হতে পারে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ স্টাফরা। তবে তাও সাধ্যের মধ্যে থাকবে বলে জানান তারা।

এদিকে লঞ্চের ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ বলছেন জ্বালানির দাম অনুপাতে ভাড়া বাড়ালেও যেন সামান্য বাড়ানো হয়। অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও খাদ্যের যে দাম তার ওপর লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করা ঠিক হবে না। সড়ক পথে বর্ধিত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করা সবার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন ভাড়া বাড়ানো হলে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকা রুটের লঞ্চগুলো যাত্রী সংকটে পড়বে বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।

এ ব্যাপারে এমভি সুন্দরবন-৯ লঞ্চের ইনচার্জ মো. জাফর আহমেদ বলেন, আমরা এখন সরকার নির্ধারিত ভাড়া নিচ্ছি না, যাত্রীদের মানসম্মত সেবা দেওয়ার কথা চিন্তা করে অনেক কম ভাড়া নিচ্ছি। এখন যে ৩০ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার, তাতে ডেকের ভাড়া হবে ৭৭৫ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন হবে ২ হাজার ২০০ টাকা এবং ডাবল কেবিনের ভাড়া হবে ৩ হাজার ৭০০ টাকা। তবে এমন ভাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া সম্ভব হবে না।

এমভি পূবালী-১২ লঞ্চের সুপারভাইজার ইকবাল মাহমুদ বলেন, এমনিতেই লঞ্চে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে, সেখানে যদি সরকারি নির্ধারিত ভাড়া আদায় করি, তাহলে যাত্রী মোটেও পাওয়া যাবে না। তাই লঞ্চে আগে যে ভাড়া ছিল সেটাই থাকবে।

এদিকে, নৌপথের বিলাসবহুল যাত্রায় লঞ্চের আনন্দ থেকে যাতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ বিমুখ না হন এবং নৌপথের এই গণপরিবহনকে টিকিয়ে রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন লঞ্চপ্রেমিরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।