ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সেমিনার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২
বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সেমিনার

১৫ আগস্ট শোক দিবস উপলক্ষে সেমিনার করেছে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম।  

রোববার বিকেলে রাজধানী জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘অশ্রুঝরা আগস্টে শোকসঞ্জাত শক্তির অন্বেষা’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।  

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তার আর্দশ মুছে ফেলে দেশকে দ্বিতীয় পাকিস্তানে পরিণত করতে চেয়েছিলো স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানিরা ২৫ বছর ধরে হত্যার চেষ্টা করেও পারেনি। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে মাত্র মাত্র তিন বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। তাকে কেন হত্যা করার প্রয়োজন হলো? কারণ, তিনি শোষিত মানুষের পক্ষে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। আর এর বিপক্ষে যে শক্তি ছিল তারা তা মেনে নিতে চায়নি। তাই তাকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে।

দেশ আগের তুলনায় অনেক ভালো চলছে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বহির্বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে এখনো। রাস্তায় হারিকেন নিয়ে কেউ নামলেই দেশ শ্রীলংকা হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।  

দীপু মনি বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেড়ে ওঠা নেতৃত্ব দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। বৈশ্বিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে পুঁজি করে দেশে স্বাধীনতাবিরোধী পক্ষ অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিদ্যুতের সংকটকে সামনে রেখে জনগণের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ২০০৮ সালের আগে দেশের মানুষ দুই-তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেয়েছে কিনা মনে করতে পারবে না। কিন্তু মানুষ এখন ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এজন্য দেশের মানুষ এখন উন্নয়নের ছোঁয়ায় প্রতিনিয়ত নিজেদেরকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন।  

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড কেবল একটি অভ্যুত্থান ছিল না। এটি ছিল ১৫ আগস্টের সামরিক অভ্যুত্থান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৮১ সালে দেশে আসার মধ্য দিয়ে পুনরায় দেশকে নতুন করে শুরু করেছেন। কিন্তু প্রতিবারের মতো এবারও নির্বাচনের আগে গণতন্ত্র মঞ্চের মতো একটি পক্ষ দেশের সার্বভৌমত্বকে অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিচ্ছে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে কলামিস্ট ও সিনিয়র সাংবাদিক বিভু রঞ্জন সরকার বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসার কথা ছিল। কিন্তু ১৪ আগস্ট দিবাগত রাত থেকে ক্যাম্পাসে একটি মহল বোমা ফাটিয়ে ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারে এটা যেমন কেউ বিশ্বাস করত না। তেমনিভাবে বঙ্গবন্ধু নিজেও বিশ্বাস করতে পারেননি। যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়, তারাই ১৫ আগস্টের মত ঘৃণিত ইতিহাস রচনা করেছেন।

স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস বলেন, আমরা শোক কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এই আয়োজন করেছি। আমরা চাই বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘ দিন বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছি। কিন্তু তাকে কেউ এভাবে হত্যা করতে পারে তা কখনো ভাবিনি। দেশে ১৫ আগস্ট একদিনে হয়নি। এটা ছিল একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, মাত্র দুই সপ্তাহ হয়েছে দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। কিন্তু একটি মহল যারা দেশকে দীর্ঘ ২১ বছর পিছিয়ে দিয়েছে, তারা আবার ১৫ আগস্টের মতো আরেকটি ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে। তা না হলে আগস্ট মাসে আমাদের দেশের সর্বোচ্চ মেধাবী শিক্ষার্থীরা এইভাবে ছাত্রলীগ বিরোধী স্লোগান দিত না। আগস্ট মাসে বরাবরের মতো একটি শক্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, বঙ্গবন্ধুকে কেন হত্যা করা হয়েছে। তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে সংগ্রাম ও মুক্তি এ দুটি কথা কেন বলেছেন তা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। সকল বিশ্ব নেতা থেকে বঙ্গবন্ধু ছিলেন সম্পূর্ণ আলাদা। এই জন্য সাম্রাজ্যবাদের পক্ষের লোকেরা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে বিপদজনক মনে করেছে। বঙ্গবন্ধু যদি আর ১০-১৫ বছর রাজনীতি করে যেতে পারতেন, তাহলে দক্ষিণ এশিয়া অনেক দূর এগিয়ে যেত।
 
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, ১০ বছরের শিশু সন্তান শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়। এটা ছিল অত্যন্ত ঘৃণিত অপরাধ, যা পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই। দেশের একদল মানুষ শোকের মাস আগস্ট এলেই মনে হয় আগস্ট বিপ্লবে মেতে ওঠে। তাই  বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামকে দেশের বর্তমান চিত্র তুলে ধরার জন্য আহবান করছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড.  রশিদ আসকারী বলেন, পৃথিবীর যতগুলো রাজনীতিবিদকে হত্যা করা হয়েছে, তার কোনটির সঙ্গে ১৫ আগস্টের তুলনা চলে না।  

অনুষ্ঠানে সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

 

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।