ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

পাবনা জেলা প্রশাসন অনড় থাকুক চায় সুশীল সমাজ

শাহীন রহমান, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১০

পাবনা: পাবনা ডিসি অফিসের কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষায় সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার পাবনা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন পাবনার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

সভায় জেলা প্রশাসককে তার অবস্থানে অনড় থেকে অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানান তারা।

বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রশাসক ড. এ এফ এম মনজুর কাদিরের সভাপতিত্বে সভায় সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা শুক্রবার তৃতীয় শ্রেণীর নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনার পুরো বিবরণ তুলে ধরে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।

মতবিনিময় সভায় পাবনা চেম্বার অফ কমার্সের সহ-সভাপতি মাহবুব-উল-আলম মুকুল বলেন, গুটি কয়েক সন্ত্রাসীর হাতে পাবনাবাসী জিম্মি থাকতে পারে না। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তাহলে সন্ত্রাসীরা পালানোর পথ পাবে না।

তিনি জেলা প্রশাসকের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনি আপনার অবস্থানে থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে যান। আমরা সঙ্গে আছি। ’

প্রবীণ সাংবাদিক-কলামিস্ট রনেশ মৈত্র বলেন, আমরা পাবনায় কখনও দেখিনি যে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। এটা একটা নজিরবিহীন ঘটনা।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিবুর রহমার হাবিব বলেন, হামলাকারীরা প্রশাসনকে লাঞ্ছিত করেনি, লাঞ্ছিত করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।   যারা এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান তিনি।  
পাবনা কলেজের অধ্য মাহাতাব উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, `জেলা প্রশাসক যেখানে লাঞ্ছিত হচ্ছেন, সেখানে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?`

ইউনিভার্সাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহানী হোসেন বলেন, `জেলা প্রশাসনের নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। ঐক্যবদ্ধভাবে সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করতে হবে। `

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাগিব হাসান টিপু বলেন, `গুটিকয়েক লোক এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাদের চিহ্নিত করতে হবে। খুঁজে বের করতে হবে, কারা তাদের লালন পালন করে। `

সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষকলীগের সভাপতি শহিদুর রহমান বিষয়টির দ্রুত শান্তিপূর্ণ সমাধান দরকার বলে মনে করেন। আর তাতেই পাবনাবাসীর মঙ্গল। `

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা মহিলা আ’লীগ নেত্রী শামসুন্নাহান রেখা নিয়োগ পরীক্ষায় সন্ত্রাসী হামলা মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেন।  

পাবনার অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন মিয়াজী বলেন, `আমরা এরই মধ্যে মামলার এজাহারভূক্ত ৩ জনসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। অন্যদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। `

মতবিনিময় সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক ড. এএফএম মনজুর কাদির বলেন, `আমি অন্যায়-দুর্নীতির সঙ্গে কখনো আপোস করিনি, ভবিষ্যতেও করবো না। যতদিন এই চেয়ারে থাকবো, ততদিন শক্ত অবস্থান নিয়ে থাকবো। আপনাদের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। `

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইমাম উদ্দিন কবির, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিজয় ভূষণ পাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও উন্নয়ন) সাইদুর রহমান, অধ্যাপক শিবজিৎ নাগ, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য জাকির হোসেন, চাটমোহর পৌরসভার মেয়র প্রফেসর আব্দুল মান্নান, সাঁথিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।