ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

অবাস্তব ডিগ্রি নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২২
অবাস্তব ডিগ্রি নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক!

লক্ষ্মীপুর : অবাস্তব ডিগ্রি নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দাবি করে অর্শ, গেজ, ওরিশ ও ভগন্দরসহ জটিল রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার এক পরিবারের চার সদস্য। নিজেদের নামে আলাদা চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানও আছে তাদের।

এক অভিযানে তাদের এমন প্রতারণার বিষয় সামনে আসে।

শর্ম্মা মেডিক্যাল হল নামে একটি চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে চিকিৎসক দাবি করা ব্যক্তিদের।

রোববার (৭ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারে থাকা শর্ম্মা মেডিক্যাল হলে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে জেলা সিভিল সর্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি ডা. সাইফুল ইসলাম শরীফ উপস্থিত ছিলেন।

অনুমোদন ও প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি না থাকায় আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল সালেহীন প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন। এ সময় মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম চালাবে না বলে মুচলেকা দেন সেখানকার ডিগ্রিহীন চিকিৎসকরা।

জানা গেছে, চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারের সমতা সিনেমা হলের পাশে শর্ম্মা মেডিক্যাল হলে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন রণজিৎ শর্ম্মাধিকারী, অনিতা রানী শর্ম্মাধিকারী, প্রণব শর্ম্মাধিকারী ও সুমিতা রানী শর্ম্মাধিকারী। তারা একই পরিবারের সদস্য। নাম মাত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের বিশেষজ্ঞ দাবি করে চিকিৎসা সেবা দিতেন তারা।

নিজ নিজ নামের তাদের সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ও রায়পুর উপজেলা শহরে চেম্বার রয়েছেন। মানুষের অপারেশনও করতেন তারা।

মাত্র সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে প্রণব শর্ম্মাধিকারী নিজেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলে দাবি করতেন। তিনি যে ডিগ্রি নামের পাশে লাগিয়েছেন, তার কোনো বাস্তবতা নেই। পুরোপুরি অবাস্তব কিছু নাম ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে চিকিৎসা দিতেন তিনি।

প্রণবের স্ত্রী সুমিতা রানীও একই অবস্থা। এর আগে ২০১৬ সালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। সে বছর ৩১ আগস্ট উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে তাদের চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয়। পরে নাম পরিবর্তন করে ফের এ ব্যবসা খুলে বসেন তারা।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে মেডিক্যাল কনসালট্যান্ট সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি ডা. সাইফুল ইসলাম শরীফ বলেন, এমবিবিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিতে পারে না। তারা নামের আগে ডাক্তার শব্দটিও লিখতে পারবে না। চন্দ্রগঞ্জের শর্ম্মা মেডিক্যাল হলে যারা চিকিৎসা দিচ্ছেন, তাদের এসব জটিল রোগের চিকিৎসা এবং অপারেশন করানোর মতো কোন প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান নেই।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহমেদ কবির বাংলানিউজকে বলেন, শর্ম্মা মেডিক্যাল হলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। অপরাধীরা মুচলেকা দিয়েছেন। তারপরও তারা যাতে প্রতারণামূলক কোনো কার্যক্রম চালাতে না পারেন সেদিকে নজরদারি থাকবে।

বাংলাদেশ সময় : ২০০০ ঘণ্টা, ৭ আগস্ট, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।