ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

তেলের দাম বাড়তি বিদ্যুতের ঘাটতি অন্য দেশেও আছে: মেয়র সাদিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২১ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২২
তেলের দাম বাড়তি বিদ্যুতের ঘাটতি অন্য দেশেও আছে: মেয়র সাদিক

বরিশাল : তেলের দাম বাড়তি, বিদ্যুতের ঘাটতি- এ অবস্থা শুধু দেশেই আছে না তয়। বিদেশেও এ সংকট আছে বলে মন্তব্য করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।

এ সময় বিএনপি বক্তব্যকে কথা বলার জন্য বলা বলেও তিনি মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বিকেলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক সভায় এসব মন্তব্য করেন তিনি।

মেয়র সাদিক বলেন, দয়া করে এবারের ঈদে কেউ আলোকসজ্জা করবেন না। প্রধানমন্ত্রীও ইতিমধ্যে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তেলের দাম বাড়তি, বিদ্যুতের ঘাটতি- এটা আমাদের দেশেই না বাহিরেও কিন্তু একই অবস্থা।

এ সময় ‘বিএনপিরা কওয়ার লইগ্যা কইতে থাকে’ বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, এটা আমাদের একার বিষয় নয়, সারা পৃথিবীর বিষয়। লন্ডনের মতো জায়গায় লোডশেডিং হচ্ছে, জাপানে হচ্ছে। সবাই খেয়াল রাখবেন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে আমরা যেন কেউ আলোকসজ্জা না করি।

গৌরবের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে বরিশাল নগরীর গড়িয়ার পাড় থেকে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ব্রিজ পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও বাইপাস সড়ক নির্মাণের অগ্রগতি বিষয়ক সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বরিশালে খাল রক্ষা বিষয়ে কথা বলেন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।

বরিশাল সিটি মেয়র বলেন, সড়ক ও জনপদ বলছে সাগরদীতে বর্তমান সড়কের পাশের স্থাপনা ভেঙে দিতে। আমি সাথে সাথে করে দিয়েছি, তারা বেইলি ব্রিজ করেছে সেখানে। এখন পর্যন্ত এমন হয়নি যে- সরকারি কোনো দফতর আমার কাছে কোনো কাজে সহায়তা চেয়েছে আর আমি তা করিনি। তবে কিছু কিছু জায়গায় মিস কমিউনিকেশন বা ভুল তথ্য দেওয়া হলে সেখানে আমার কি করার আছে?

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের খাল খননের কাজে কোনো বাধা দেননি জানিয়ে মেয়র বলেন, একসময় বরিশাল শহরে ৪৬টি খাল ছিল। আমি মেয়রের চেয়ার বসার আগেই অনেক খাল ড্রেন হয়ে গেছে, বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমি বলেছি এখন যে খালগুলো উদ্ধার করা সম্ভব সেগুলো উদ্ধার করে স্থায়ী ব্যবস্থা করবো। ২৬০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। এটা আমার প্রথম প্রজেক্ট এবং প্রতিটি খালের বিষয় এতে আছে।

তিনি আরও বলেন, যে ৭ টি খাল খননের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর কাজে আমি কোনো বাধা দিইনি। আমি প্রধানমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিতকরণ চিঠি দিয়েছি। কারণ, আমাদের সিটি করপোরেশনের প্রজেক্টের মধ্যে খালগুলো রয়েছে। আর ৭ কোটি টাকায় আমাদের বরিশাল শহরের খাল রক্ষা, খনন ও উদ্ধার কোনোটিই পুরোপুরি হবে না।

আমি কোনো কাজে বাধা দিইনি কিংবা করতে পারবো না তাও বলিনি। কিন্তু তারপরও বলা হচ্ছে- আমি নাকি বাধা দিচ্ছি। দূর থেকে অনেক কথা বলা যায়। আবার বললেও অনেক কথা বলা যায়। কিন্তু আসেন কাগজপত্র নিয়ে বসি, তারপর কথা বলি। সিটি করপোরেশন কোথায় ছিল আর এখন কোথায় আছি সেটা দেখতে হবে। আমি যে কাজ করি তার প্রতিটার ব্যাখ্যা ও সলিউশন দিতে পারবো।

এ সিটি মেয়র আরও বলেন, ময়লা যে খালগুলোর কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো যদি ডেইলি ডেইলি উদ্ধার করি আর মানুষের বাড়ি-ঘর ভাঙে তাহলে সেটা কি ঠিক বা সম্ভব? আমার কথা হচ্ছে প্রজেক্ট পাশ হয়ে গেলে একবারে যদি কাজ শুরু করি তাহলে সেটা ভালো। একবারে উচ্ছেদ করে পার্মানেন্ট সলিউশন দিতে হবে। এর আগেও বার বার খাল খনন ও উচ্ছেদের নামে অনেক কিছু হয়েছে। কিন্তু সেই কারসাজি আমি করবো না। যেটা করবো আমি পার্মানেন্টলি করবো। আর খাল পরিষ্কার আমাদের সিটি করপোরেশনের লোকাল ফান্ড দিয়ে যেটুকু সম্ভব করেছি। যার কারণে এখন কিন্তু তেমন একটা জলাবদ্ধতা হয় না।

বরিশাল সিটি করপোরেশনে ড্রেনের হিসেব ছিল না। কোথা থেকে পানি আসবে আর কোথা থেকে বের হবে তার ব্যবস্থাও করা ছিল না। আর এই ড্রেন করে বিগত দিনে কী লাভ হয়েছে তাও বুঝতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর বরিশালে জলাশয় ভরাট বন্ধ রাখার পাশাপাশি অবৈধ ড্রেজিং বন্ধ রাখা হয়েছে আজ পর্যন্ত। বিগত দিনের থেকে শহরে জলাবদ্ধতা অনেকে কমেছে, এখন আর পানি আটকে থাকে না বলেও উল্লেখ করেন মেয়র।

এ সময় বিসিকের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই বলে উল্লেখ করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।

সভায় বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (বরিশাল অঞ্চল) এ কে এম আজাদ রহমান, বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারসহ সরকারি বিভিন্ন দফতের কর্মকর্তা ও পেশাজীবী, সামাজিক-রাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

তারা নগরের ভেতরকার মহাসড়কের ১১ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ, বাইপাস সড়ক এবং কীর্তনখোলা নদীতে আরেকটি সেতু নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা করেন। বরিশালের উন্নয়নে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন উপস্থিত সবাই।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২২
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।