ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পটুয়াখালীতে এবার মাদরাসা শিক্ষকের মাথা ন্যাড়া

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৮ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২২
পটুয়াখালীতে এবার মাদরাসা শিক্ষকের মাথা ন্যাড়া

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফলে এবার মাও. মনিরুল ইসলাম নামে এক মাদরাসা শিক্ষককের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার (৩ জুন) বাউফল পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের হাজি সড়কে এ ঘটনা ঘটলেও বুধবার (৬ জুন) বিষয়টি জনসম্মুখে আসে।

বাউফল পৌরসভার মদিনাতুল উলুম নুরানি হাফেজি ক্যাডেট মাদরাসার পরিচালক মাও. আনিচুর রহমানের নির্দেশে তার মাথা ন্যাড়া করে দেন জসিম উদ্দিন নামে অপর এক শিক্ষক।

এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

ভিকটিম শিক্ষক মাও. মনিরুল ইসলামের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার আলী নগর গ্রামে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাফেজ মনিরুল ইসলাম বাউফল মদিনাতুল উলুম নুরানি হাফিজি ক্যাডেট মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে চাকরি করতেন। একজন ভাল শিক্ষক হিসেবে ছাত্র ও অভিভাবকদের কাছে তার সুনাম ছিল। ওই মাদরাসার পরিচালক মাও. আনিচুর রহমানের সঙ্গে তার মতবিরোধ হওয়ায় সম্প্রতি তিনি চাকরি ছেড়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার লাউতলী জামিয়া মদিনাতুল উলুম মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি চলে যাওয়ার পর কয়েকজন ছাত্র ওই মাদরাসা ছেড়ে অন্য মাদরাসায় ভর্তি হন।

কয়েক দিন আগে বাউফল শহরের ২নং ওয়ার্ডের জাকির হোসেনের ছেলে মুজাহিদ (৮) ওই মাদরাসা ছেড়ে হাফেজ মনিরুল ইসলামের চাঁদপুরের মাদরাসায় ভর্তি হন। মুজাহিদের বাবা তার ছেলেকে ভর্তি করে দিয়ে আসেন।

এতে ক্ষুব্ধ হন বাউফল মদিনাতুল উলুম নুরানি হাফিজি ক্যাডেট মাদরাসার পরিচালক  মাও.  আনিচুর রহমান। তার ধারণা শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ওই ছাত্রকে ফুঁসলিয়ে চাঁদপুর তার মাদরাসায় ভর্তি করেছেন। এরপর তিনি অভিভাবক পরিচয়ে অন্য একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে হাফেজ মনিরুল ইসলামকে কয়েকজন ছাত্র দেওয়ার নামে চাঁদপুর থেকে গত ৩ জুলাই বাউফলে ডেকে এনে কালিশুরী এলাকার একটি মাদরাসার রুমে আটকে রেখে মারধর করেন। এরপর তার নির্দেশে মাও. জসিম উদ্দিন নামে আরেক শিক্ষক মনিরুল ইসলামের মাথা ন্যাড়া করে দেন এবং তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও সাড়ে ৪ হাজার রেখে রাত ৮টার দিকে ছেড়ে দেন।

বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন বলেন, আমি এ বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। ওই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ভিকটিম মাও. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাকে পরিকল্পিতভাবে বাউফলে ডাকা হয়েছিল।   ষেকানে সাড়ে চার হাজার টাকা জরিমানা ও আমার মাথা ন্যাড়া করা হয়।   সে সময় আমি তাদের হাত-পা ধরে ক্ষমা চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা আমাকে রেহাই দেয়নি। আমার প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছে তা দেখে বাউফলের পরিচিতজনরা গত ৪ জুন আমাকেসেখানে আবারও ডাকেন।   আমি যাওয়ার পর তাদেরও বিচার হয়েছে। সে সময় ছাত্রলীগের হাসান ভাই, ইউনুস ভাইসহ স্থানীয় অনেকে ছিল। সবাই মিলে ওনাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তবে আমি তাদের মাফ করে দিয়েছি। তারাও তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। আমি যে সাড়ে ৪ হাজার টাকা দিয়েছিলাম সেটা এবং আমার যাতায়াত বাবদ এক হাজার টাকা নিয়েছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আনিচুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা স্থানীয়ভাবে বসেছিলাম। এখন আবার বসছি, এ বিষয়ে পরে কথা বলব।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৮ ঘণ্টা, ৬ জুলাই, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।