ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রেমিকাকে নিয়ে ছেলে উধাও, মাকে পুড়িয়ে হত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২২
প্রেমিকাকে নিয়ে ছেলে উধাও, মাকে পুড়িয়ে হত্যা

ঢাকা: প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত ১৯ জুন কাওকে কিছু না বলে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান সিরাজুল ইসলাম (২০) ও খুকি আক্তার (২০)। তারা দুজনই ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানাধীন চর ঈশ্বরদিয়া পূর্বপাড়ার বাসিন্দা।

এ ঘটনার পর ১০ দিনেও মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে বাবা খোকন মিয়া ওরফে কাজল ও তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার কনা সিরাজুলের বাসায় যান। সেখানে গিয়ে ছেলের বাবা আব্দুর রশিদকে গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ছেলের (সিরাজুল) মা লাইলী আক্তারের মুখ চেপে ধরে হাত-পা বেঁধে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন খুকির বাবা খোকন ও মা নাসিমা আক্তার কনাসহ সহযোগীরা।

পেট্রোলের আগুনে সিরাজুলের মা লাইলীর শরীরের ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়। পরে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার মারা যান লাইলী আক্তার। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত খোকন ও তার স্ত্রী নাসিমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ময়মনসিংহ জেলা শাখার একটি দল।

বুধবার (৬ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত ডিআইজি (পূর্বাঞ্চল) মো. সায়েদুর রহমান।

তিনি বলেন, সিরাজুল ও খুকির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। গত ১৯ জুন তারা পরিবারকে না জানিয়ে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনার ১০ দিন পর খুকিকে খুঁজে না পেয়ে তার বাবা খোকন দলবল নিয়ে ছুটে যান ছেলে সিরাজুলের বাসায়। সেখানে গিয়ে ছেলের বাবাকে গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সিরাজুলের মা লাইলীর হাত-পা বেঁধে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন খোকন ও তার স্ত্রী নাসিমা। পরে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যান। ভুক্তভোগী লাইলীকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আগুনে লাইলীর শরীরের ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় লাইলীর স্বামী আব্দুর রশীদ বাদী হয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা (নং-৯৯) দায়ের করেন। এ ঘটনার তদন্তে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সহযোগী এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি জাহাঙ্গীর ও ৭ নম্বর আসামি আছমাকে গ্রেফতার করে। কিন্তু মূল হত্যাকারীরা আত্মগোপনে ছিলেন। এক পর্যায়ে ময়মনসিংহ জেলার পিবিআই টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ৫ জুলাই ভোরে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানা এলাকা থেকে অভিযুক্ত খোকন মিয়া ও তার স্ত্রী নাসিমাকে গ্রেফতার করে।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার খোকন ও নাসিমা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বাকি আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত ডিআইজি (পূর্বাঞ্চল) সায়েদুর।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২২
এসজেএ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।