ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

করোনা ঝুঁকিতে খালেদা জিয়াকে বাসায় নেওয়া হয়েছে: চিকিৎসক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২২
করোনা ঝুঁকিতে খালেদা জিয়াকে বাসায় নেওয়া হয়েছে: চিকিৎসক

ঢাকা: করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকির কারণেই অসুস্থ খালেদা জিয়াকে তাঁর বাসায় স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড।

শুক্রবার (২৪জুন) বিকেলে এভারকেয়ার হাসপাতাল মিলনায়তনে বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার এ তথ্য জানান।

 

এর কিছুক্ষণ পর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে।

ডা. শাহাবুদ্দিন বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) এখনো অসুস্থ। তিনি যে অবস্থায় এসেছিলেন সেই অবস্থা থেকে স্টেবল। কিন্ত বাকীগুলো যেমন বিল্ডিং কমপ্লিকেশন; ইটস এ ভেরি চ্যালেঞ্জিং গেইম নাউ। কিডনি কমপ্লিকেশন আমরা ওয়াকওভার করেছি। উনি হাই রিস্ক অব বিল্ডিং। এখনো উনার হার্টে দুইটা ব্লক রয়ে গেছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়ছে, উনাকে এখানে রাখতে চাচ্ছি না। কারণ কোভিড প্লাস ইনফেকশন ইজ এ চান্স। এসব কারণে তাঁর যদি এগুলো হয় তাঁকে আবার ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে নিয়ে চলে যাবে। সেজন্য আমরা পূর্নাঙ্গ মেডিক্যাল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, তাকে আপাতত বাসায় নেওয়া হোক।  

খালেদা জিয়া ঝুঁকিতে আছেন উল্লেখ করে ডা. শাহাবুদ্দিন বলেন, বাসায় থাকলেও পুরো মনিটরিংয়ে উনাকে আমাদের রাখতে হবে। পরে যদি কোনো কমপ্লিকেশন হয় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।


৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বুকে ব্যথা নিয়ে গত ১০ জুন গভীর রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হৃদযন্ত্রে একটি রিং বসানো হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান বলেন, আরো যে দুইটা ব্লক রয়েছে। আমাদের আন্তর্জাতিক গাইড লাইন হচ্ছে- যে রক্তনালীর ব্লকের জন্য তার সমস্যা হচ্ছে ওটা অপসারণ করে চলে আসো। ডু ইট এন্ড কাম অন এন্ড সেইভ দ্যা পেসেন্ট। আমরা ওটা করেছি।

এখন দ্বিতীয়টা করি, তৃতীয়টা করি- কোনো কোনো রোগীর করা হয় যেসব রোগী শকে থাকে- যারা দেখছে তারা মরে যাবে। যদি না করি অথবা রক্তনালীগুলো বড় থাকে, যাদের কোনো কমপ্লিকেশন নাই, যাদের লিভার ডিজিস নাই, কিডনি ডিজিস নাই, চান্স অব হার্ট ফেলিউর নাই-তখন আমরা অপসারণ করে আসি। অন্যথায় আমাদের সেকেন্ড-থার্ড করার কোনো নিয়ম নাই।  

কারণ আপনি দেখেন উনার (খালেদা জিয়া) একটা ব্লক অপসারণ করতে গিয়ে তার কিন্তু কিডনি শাটডাউন হয়েছে, হার্ট ফেইলিউর হয়েছে। ওই দুটা যদি করতাম তার কিডনি পুরোপরি শাটডাউন হতো। সেজন্য আমরা ওই দুইটা ব্লক অপসারণ করিনি।

মেডিক্যাল বোর্ড সদস্য অধ্যাপক ডা. এএফএম সিদ্দিকী বলেন, ম্যাডামের অনেক জটিল অসুস্থতা আছে। উনার রেনাল ফেইলিওর, লিভার সিরোসিস কিন্তু রয়ে গেছে। সেটার কোনো চিতিৎকসা হয়নি। আমরা শুধু ব্যান্ডিং করে স্পটগুলোকে লাইগেশন করে দিয়ে বন্ধ করে রেখেছি। সেগুলোর কি অবস্থা, গত ৬ মাসে আমরা কিন্তু ফলোআপ করতে পারিনি। এখন এই কার্ডিয়াক কন্ডিশনের জন্য উনার ফলোআপ করাটা আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা যা করার করছি। আল্লাহর অশেষ রহমত।  

ডা. সিদ্দিকী বলেন, আমরা বার বার বলছি যে কমপ্রেহেনসিভ সব জটিলতাকে একটা বেস্ট সেন্টারে নিয়ে উনাকে সুস্থ করে তোলার যে প্রক্রিয়া যেটা- কিন্ত আমরা এখানে করতে পারছি না। সেই ধরনের সেন্টার, সেই ধরনের সব কিছু করার সক্ষমতায় আমাদের অভাব আছে। সেজন্যই আমরা সবসময় বলেছি, এখনো বলছি যে, উনার সঠিক, সার্বিক, সুষ্ঠু চিকিৎসা এই দেশে সম্ভব নয়। সেটা বিশ্বের কিছু উন্নত দেশের উন্নত সেন্টারে করতে পারলে সেটা উনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, উনার সহধর্মিনী ডা. জোবাইদা রহমানসহ উনার পরিবারের সকল সদস্য  হাসপাতালের সর্বস্তরের চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকস এবং ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এটা আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য এবং উনার জন্য দোয়া করার অনুরোধ জানিয়েছেন।  

সংবাদ সম্মেলনে মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য ডা. শেখ ফরিদ আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. আল মামুন এবং হাসপাতালের মেডিক্যাল প্রমোশন বিভাগের প্রধান বিনয় কাউর উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২২
এমএইচ/এসএ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।