ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বায়ু-শব্দ দূষণেও মোটরযান

জি এম মুজিবুর, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫১ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২২
বায়ু-শব্দ দূষণেও মোটরযান

ঢাকা: রাজধানীর পরিবেশ দূষণেও অন্যতম ভূমিকা রাখছে অধিকাংশ যানবাহন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হলেও বাস্তবে অনেক পুরনো যানবাহনের বেশিরভাগই ফিটনেস নেই।

সারাক্ষণ ইঞ্জিনের বিকট আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গে কালো ধোঁয়াও নির্গমন করে চলেছে পুরনো যানবাহনগুলো।

অভিযানে নিয়মিত ধরা পড়ছে এসব যানবাহন। তবে পরিবহন মালিকরা এজন্য ভেজাল জ্বালানিকে দায়ী করেছেন।

ঢাকা শহরে প্রতিদিন কয়েক লাখ যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করে। এসব যানবাহনের বড় একটা অংশ বায়ু দূষণের জন্য দায়ী।

মোটরযান চলাচলের প্রধান সড়কগুলো আবাসিক এলাকা সংলগ্ন হওয়ায় এসব এলাকার লোকজন উচ্চ হারে বায়ু দূষণের শিকার হচ্ছে। এতে অরক্ষিত গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে পথচারী, ফেরিওয়ালা ও দোকানদার, ট্রাফিক পুলিশ এবং গাড়ি চালকরা। এসব মোটরযান থেকে ক্ষতিকর বস্তুকণা (কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং ওজোন) নির্গত হয়।

সরেজমিনে মিরপুর ও উত্তরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নগরীতে চলাচলকারী গণপরিবহনের বেশির ভাগ বাস-মিনিবাস লক্কর-ঝক্কর হয়ে পড়েছে। অনেক গাড়ির আবার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও রং করেই চলাচল করছে।

পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলেও প্রশাসনের নাকের ডগায় এগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গোটা নগরী। এসব যানবাহন থেকে বিষাক্ত পদার্থ নিসঃরণে বাতাসের সঙ্গে মিশে ঢুকে পড়ছে মানবদেহে।

যানবাহনগুলো এভাবে পরিবেশ দূষণ করলেও সাম্প্রতিক সময়ে বড় ধরনের কোনও জরিপ বা সমীক্ষা করা হয়নি। যানবাহনগুলো প্রধানত তিন ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করছে। এর মধ্যে রয়েছে ডিজেল, পেট্রোল ও গ্যাস। ইঞ্জিনের ডিজাইন ত্রুটি, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করা, মানসম্মত জ্বালানি ব্যবহার না করা, অতিরিক্ত যাত্রী ও পণ্য বোঝাই, নিম্নমানের লুব্রিকেন্ট ব্যবহার ইত্যাদি কারণে বায়ু দূষণ হচ্ছে।

বায়ুদূষণের পাশাপাশি রাজধানীতে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করে মারাত্মকভাবে শব্দ দূষণও করা হচ্ছে।

হাসপাতাল ও স্কুল-কলেজের সামনে হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো নিষেধ থাকা সত্ত্বেও মানছেন না চালকরা।  

রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন যেসব পরিবহন যাতায়াত করে যেমন ঢাকা টু হালুয়াঘাট (শ্যামলী বাংলা) আলম এশিয়া, (ঢাকা টু ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ) ঈগল পরিবহন, আনন্দ পরিবহন, ঢাকা এক্সপ্রেস, ঢাকা টু বিরানীবাজার সৌখিন পরিবহন, সোনার বাংলাসহ আরও অনেক পরিবহন রয়েছে যারা হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করছে। রাজধানীর ভেতরেও কিছু কিছু গণপরিবহনকেও হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। এমন কি অনেক মোটরসাইকেলও উচ্চ শব্দের হাইড্রোলিক হর্ন লাগিয়ে শব্দ দূষণ করে চলাফেরা করছে।

উত্তরা বিভাগের উত্তরা-পূর্ব জোনের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) সাজ্জাদ হোসেন   বাংলানিউজকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা থাকায় এবং পুলিশ কমিশনার স্যারের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা প্রতিদিনই হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে থাকি। গত এক সপ্তাহে ৭০ থেকে ৮০টি বাসের হাইড্রোলিক হর্ন ধ্বংস করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

যানবাহন থেকে নিঃসরিত দূষণকারী পদার্থের মধ্যে রয়েছে আইডল কার্বন মনোক্সাইড ও আইডল হাইড্রোকার্বন। এসব বস্তুকণার কারণে মানবদেহে ক্যানসার, হৃদরোগ, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের অকার্যকারিতা ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২২
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।