ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নাটোরে ১৬ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৯ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২২
নাটোরে ১৬ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা

নাটোর: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে অভিযানে নেমেছে নাটোরের স্বাস্থ্য বিভাগ।

অভিযানের প্রথম দিন শনিবার (২৮ মে) জেলার চার উপজেলায় ১৬টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এরমধ্যে রয়েছে- জেলার শহরে ৭টি, বড়াইগ্রাম উপজেলায় ৩টি, গুরুদাসপুর উপজেলায় ৪টি ও সিংড়া উপজেলায় ২টি।  

ভ্রাম্যমান আদালতের সহযোগিতায় স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে অভিযান পরিচালনা করে এসব ক্লিনিক ও সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সদর উপজেলায় বন্ধ করে দেওয়া সাতটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- সেন্ট্রাল ল্যাব, পদ্মা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টি সেন্টার, বারাত হাসপাতাল এন্ড ডিজিটাল ল্যাব, হেলথ কেয়ার ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, তামান্না ডিজিটাল ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, মদিনা হাসপাতাল এন্ড ফ্যাকো সেন্টার এবং প্রাইম ডায়াগনষ্টিক।

বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়াস্থ আল আরাফা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, অনুভব হাসপাতাল এন্ড ক্লিনিক ও রাজাপুর এলাকার শশী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। সিংড়া উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চলনবিল ডিজিটাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও বালুয়াবাসুয়া এলাকায় আনোয়ার চক্ষু হাসপাতাল।  

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গুরুদাসপুর উপজেলায় বন্ধ হওয়া চারটির তালিকা দিতে পারেননি সেখানকার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মুজাহিদুল ইসলাম।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্র জানায়, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাটোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহাবুবুর রহমান এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খালিদ হাসানের নেতৃত্বে প্রথমে শহরের মাদ্রাসা মোড়ে সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় অনুমোদনের কোন কাগজপত্র না থাকায় সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সিলগালা করে দেওয়া হয়।

পরে ভ্রাম্যমান আদালত পর্যায়ক্রমে একই অভিযোগে পদ্মা ক্লিনিক, প্রাইম ডায়াগনস্টিক সেন্টার, তামান্না ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মদিনা চক্ষু হাসপাতাল, চক্ষু ক্লিনিক ও ফ্যাকো সেন্টার, হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার সিলগালা করে দেন। এ সময় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার মো: রাসেলসহ অন্যন্যরা অভিযানে অংশ গ্রহণ করেন।

বড়াইগ্রাম উপজেলায় নির্বাহী অফিসার মারিয়াম খাতুনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় নিবন্ধন না থাকায় বনপাড়া এলাকায় দুইটি ও রাজাপুর এলাকায় একটি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় সঙ্গে ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ খুরশীদ আলমসহ স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা।  

গুরুদাসপুর উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করে ৪টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হলেও তার তালিকা দিতে অনিহা প্রকাশ করেছেন সেখানকার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম।

সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রথম দিন অভিযান চালিয়ে দুইটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নিবন্ধন না হওয়া পর্যন্ত তারা কোন কার্যক্রম করতে পারবেনা বলে অঙ্গিকার করানো হয়। তার উপজেলায় বেসরকারি ১০টি বৈধ ক্লিনিক ও হাসপাতাল রয়েছে।

নাটোর জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় বৈধ এবং অবৈধ দুই শতাধিকের বেশি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এরমধ্যে বৈধ রয়েছে ১৭০টি। প্রথম দিনে সদরে মোট ১২টি তালিকা নিয়ে বন্ধ অভিযান চললেও বন্ধ করা হয়েছে সাতটি। বন্ধের তালিকায় থাকা বাকি ৫টি হচ্ছে- শেফা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নাটোর ডায়াবেটিক, হৃদ ও চক্ষু হাসপাতাল, সূর্যের হাসি ক্লিনিক, গ্রামীন হাসপাতাল ও জমজম হাসপাতাল।

নাটোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহাবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বন্ধ করে দেওয়া হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তিকৃত রোগীদের নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খালিদ হাসান বাংলানিউজকে বলেন, অভিযানে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সনদ যাচাই করা হয়েছে। বৈধ কাগজ না থাকায় মেডিক্যাল প্যাকটিস এবং বেসরকারি ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরি (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ-১৯৮২ অনুযায়ী এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

নাটোর সিভিল সার্জন রোজি আরা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, অভিযান পরিচালনা করে নাটোর শহরে অনুমোদনবিহীন সাতটি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিংড়ায় ২টি, গুরুদাসপুরে ৪টি, বড়াইগ্রামে ৩টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর তালিকা সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দিতে বলা হয়েছে।  

তিনি আরো বলেন, হাসপাতালসমূহে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৯ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।