ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সিলেটে মন্ত্রী যেতেই ত্রাণ নিয়ে কাড়াকাড়ি, লাঠিচার্জের অভিযোগ!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৪ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২২
সিলেটে মন্ত্রী যেতেই ত্রাণ নিয়ে কাড়াকাড়ি, লাঠিচার্জের অভিযোগ!

সিলেট: পাহাড়ি ঢলে ও ভারি বর্ষণে গত ১১ মে থেকে বন্যা প্লাবিত কোম্পানীগঞ্জ। উপজেলার দুর্গত এলাকার মানুষ বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যাভাবে দিন পার করছেন।

শুক্রবার (২০ মে) থেকে কোম্পানীগঞ্জে কমতে শুরু করেছে পানি। এমন সময় দুর্গতদের পাশে এসে দাঁড়ালেন স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

শনিবার (২১ মে) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে ত্রাণ বিতরণ করছিলেন তিনি। এমন সময় বানবাসীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের উদ্বোধন করেই মন্ত্রী অন্যত্র চলে যান। তবে ত্রাণের জন্য হাহাকার করা মানুষের সংখ্যার তুলনায় ত্রাণ সামগ্রী অপ্রতুল থাকায় বন্যা কবলিতরা ত্রাণ নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করেন। তাতে ত্রাণ সামগ্রী নেওয়ার বদলে মার খেয়ে ফিরতে হয়েছে অনেককে।

বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে বানবাসী মানুষের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ফলে ত্রাণ সামগ্রী তো জুটেইনি, উল্টো পুলিশের মার খেয়ে খালি হাতে ঘরে ফিরতে হয়েছে তাদের।

মন্ত্রী ইমরান আহমদের ত্রাণ বিতরণে আসা লোকজন এমন অভিযোগ করে বলেন, মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর স্থানীয় ইউপি সদস্য ৪/৫ জনের ত্রাণের প্যাকেট ফিরিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয় লোকজন বলেন, বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণের খবরে সকাল থেকে উপজেলা পরিষদের সামনে ভিড় করেন সহস্রাধিক বন্যার্ত লোকজন।

মন্ত্রী পৌঁছানোর পর ৪/৫ জনের হাতে প্যাকেট তুলে দিয়ে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। মন্ত্রী চলে যেতেই ত্রাণ নিয়ে বন্যার্তদের মাঝে কাড়াকাড়ি ও হট্টগোল শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে অন্তত অর্ধশত নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, মন্ত্রী ত্রাণ দেবেন জেনে এসে মার খেয়ে ফিরতে হলো।

সিলেট কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ৮০০ প্যাকেট ত্রাণ রেডি রেখেছিলাম বিভিন্ন স্থানে বিতরণে করতে। এরমধ্যে ওই স্থানে ২০০ প্যাকেট বিতরণের জন্য রেখেছিলাম। অপেক্ষাকৃত বেশি দুর্গত ২০০ মানুষের তালিকায় ১২০টি নাম দিয়েছিলেন চেয়ারম্যানরা এবং ৮০টি নাম উপজেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া হয় আশ্রয়ণ প্রকল্পে বাড়িঘর ডুবে যাওয়া ২৮জনসহ। মন্ত্রী উদ্বোধন করার পরও ভালোভাবে ত্রাণ বিতরণ চলছিল। পরবর্তীতে শেষ সময়ে গিয়ে হট্টগোল শুরু হয়েছিল। পুলিশ শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করেছে, তবে লাঠিপেটার ঘটনা ঘটেনি।

তিনি বলেন, মন্ত্রী আসলে এমনিতে হাজার খানেক লোকজন জড়ো হয়ে যায়। কিন্তু আমরা অপেক্ষাকৃত দুর্গতদের ত্রাণ দিয়েছি। যে কারণে শেষ দিকে কিছু হুলস্থুল হয়েছে। তবে ত্রাণ কেড়ে নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর সংবাদ মাধ্যমে ‘মাহফুজ’ নাম এসেছে, ওই নামের কোনো মানুষ তালিকায়ও নেই।

তিনি বলেন, এখনো ৫০০ প্যাকেট ত্রাণ বিতরণের জন্য রয়েছে। আগামীকাল এগুলো বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করা হবে।

এছাড়া উপজেলায় বন্যার পানি কিছুটা কমেছে। এভাবে কমতে থাকলে জনজীবন অনেক স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলেন ইউএনও।

এর আগে মন্ত্রী বন্যার্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের কয়েকদিন আপনাদের একটু কষ্ট করতে হবে। আমরা চেষ্টা করবে কিভাবে আপনাদের কষ্ট লাঘব করা যায়। পানি নেমে যাওয়ার পর আপনাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১১৪ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২২
এনইউ/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।