ঢাকা, শনিবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৫ মে ২০২৪, ১৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

জোড়া হত্যা: বোয়ালমারীতে বাড়িঘর ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২২
জোড়া হত্যা: বোয়ালমারীতে বাড়িঘর ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় জোড়া হত্যা পরবর্তী সহিংসতায় বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে স্থানীয় এক ইউপি মেম্বারের ইন্ধনে তার অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

বৃহস্পতিবার (৫ মে) উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের চণ্ডিবিলা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ওই ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঈদের দিনের হত্যাকাণ্ডের জেরে ৩ কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী চণ্ডিবিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের জেরে চণ্ডিবিলা গ্রামের প্রায় ১০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

চণ্ডিবিলা গ্রামের পাট ব্যবসায়ী আব্বাস শেখের স্ত্রী মদিনা বেগম (৩০) জানান, ঈদের দিন বিকেল ৩টার দিকে তাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় ঘরে থাকা ২০০-২৫০ মণ পাট, ৪/৫ মণ পেঁয়াজের দানা, দামি আসবাবপত্র, ফ্রিজ, নগদ টাকাসহ বসতঘরটি পুড়ে যায়। দুর্বৃত্তরা একটি খেক্কোর এবং দুটি মোটরসাইকেল ভেঙে ফেলে।

মদিনা বেগম আরো জানান, ঘোষপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি এবং সাবেক ইউপি মেম্বার জামাল হোসেনের ইন্ধনে তার ভাই রিপন, ইয়াকুব, লতিফ, আনোয়ার, সজল, মঞ্জু, নাজমুলসহ ৪০/৫০ জন ভাঙচুর ও লুটপাটে অংশ নেয়।  

একই গ্রামের মো. ইউসুফ মোল্যার স্ত্রী হাছিনা (৫০) বাংলানিউজকে জানান, রিপনের নেতৃত্বে একদল লোক তাদের বাড়িঘর ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে।

সাবেক ইউপি সদস্য জামাল হোসেনের বাড়ির কয়েকশ গজের মধ্যে অবস্থিত শাহজাহান মোল্যার বাড়ি। শাহজাহান মোল্যা কৃষিকাজ করেন এবং বাড়ির পাশের একটি মসজিদের ক্যাশিয়ার।  

ঈদের দিন সহিংসতার এক পর্যায়ে জামালের ইন্ধনে তার ভাই রিপন, ইয়াকুব, লতিফ, আনোয়ার, সজল, মঞ্জু, নাজমুলসহ ৪০-৫০ জনের ওই দলটি শাহজাহান মোল্যার বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা জানান। লুটপাটকারীরা শাহজাহান মোল্যার নিকট রক্ষিত মসজিদের ৬০ হাজার, ব্যক্তিগত ৪০ হাজার এবং ঘরে থাকা আট আনা ওজনের একটি চেইন ও পাঁচ আনা ওজনের একটি কানের দুল ছিনিয়ে নেয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।  

বৃহস্পতিবার (৫ মে) সরেজমিনে ওই বাড়ি গেলে ইয়াকুব, লতিফ, আনোয়ার, সজল, মঞ্জু, নাজমুলসহ ১৫-২০ জনকে ওই বাড়ির লিচু গাছ থেকে লিচু ছিঁড়ে নিতে দেখা যায়। বাড়ির লোকেরা বাঁধা দিলে তাদের গালিগালাজ করে।  

এ সময় আশেপাশের লোকেরা জানান, এরা জামাল মেম্বারের অনুসারী। এলাকায় মহড়া দিচ্ছে।
পাশের বাড়ির মোস্তফা মোল্যার গ্যাসের সিলিন্ডার, সেলাই মেশিন লুট করে নিয়ে গেছে এবং ফ্রিজ ভেঙে ফেলেছে। এছাড়া সামাদ মোল্যা, হাসমত মোল্যাসহ আরো কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমি এসবের কোনো কিছু জানি না। এটা আমার জানার বাইরে। অন্যায়কে আমি সাপোর্ট করি না। এসব লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই।

ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী-বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা সার্কেল) সুমন কর বাংলানিউজকে বলেন, এ ব্যাপারে এখনও কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।