ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মাঠ ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বাস এলাকাবাসীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
মাঠ ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বাস এলাকাবাসীর ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগান তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্তে সৃষ্ট বিতর্কের অবসান হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে। কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ না করে এটি উন্মুক্ত মাঠ হিসেবে রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে মাঠ রক্ষার আন্দোলনে জড়িত থাকা মানবাধিকারকর্মী, পরিবেশকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মীদের পাশাপাশি উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসীরাও। স্থানীয় শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধরাও ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে।

শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সরেজমিনে তেঁতুলতলা মাঠে এসে দেখা যায়, স্থানীয় শিশু-কিশোররা ফুটবল খেলায় মেতেছে। দীর্ঘ দুইমাস পর মাঠে খেলতে নেমে যেন তাদের আনন্দের শেষ নেই। এ সময় 
মাঠের পাশে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই দাঁড়িয়েছিলেন। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলেন তারা।

তেঁতুলতলা মাঠে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বপালন করা পুলিশ সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, মাঠটি যেন আগের রূপ ফিরে পেয়েছে।

খেলার ফাঁকেই স্কুল পড়ুয়া কিশোর সাফাত জানায়, প্রায় দুই মাস ধরে তারা মাঠে খেলতে পারেনি। মাঠে এলেই পুলিশ তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে। এদিন মাঠে খেলতে নেমে ভালো লাগার কথা জানায় এই কিশোর।

আরেক শিশু বিপ্লব বলে, ‘প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, আমাদের মাঠকে তিনি আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। ’

স্থানীয় বাসিন্দা রাতুল বলেন, ‘অবসর সময়ে আমরা মাঠে এসে আড্ডা দেই, সময় কাটাই। বাচ্চারা সময় পেলে খেলাধুলা করে। এই জায়গাটুকু চলে যাওয়ায় আমাদের সবারই খারাপ লাগছিল। এখন এটি আবার এলাকাবাসীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এটা আমাদের কাছে এবারের সেরা ঈদ উপহার। ’

ষাটোর্ধ বয়সী শাহ আলম নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমি যখন থেকে এ এলাকায় বসবাস করছি তখন থেকেই এটি খালি জায়গা হিসেবে দেখেছি। চারদিকে সুউচ্চ ভবনের মাঝখানে এক টুকরো খালি জায়গাটি এখানকার সবার, বিশেষ করে শিশুদের কাছে অনেক স্পেশাল। এই জায়গাটি মাঠ হিসেবেই থাকছে, এরচেয়ে খুশির খবর আর হতে পারে না। ’

তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সৈয়দা রত্না বলেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল, আমাদের দাবির কথা প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্ত পৌঁছালে তিনি মাঠের পক্ষে থাকবেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছি, আমাদের কথাগুলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য। অবশেষে তার কাছে আমাদের কথাগুলো পৌঁছেছে। আমার বিশ্বাস সঠিক ছিল। লাভ ইউ বুবু, আপনাকে ধন্যবাদ। ’

মাঠে স্থাপনা না হওয়ার ঘোষণাকে এলাকার শিশু-কিশোরদের জন্য ঈদ উপহার উল্লেখ করে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘শিশ-কিশোরদের পক্ষে থেকে প্রধানমন্ত্রী আবারও প্রমাণ করলেন, তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা। ’

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানান, মাঠটিতে আর কোনো নির্মাণকাজ হবে না। জায়গাটি যেভাবে ছিল, সেভাবেই থাকবে। এটি আগের মতো এলাকাবাসী ব্যবহার করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
পিএম/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।