ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

‘এমন খুশির ঈদ কখনো পাইনি’

মহিউদ্দিন মাহমুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
‘এমন খুশির ঈদ কখনো পাইনি’

ঢাকা: ঈদের আগে তৃতীয় ধাপে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়েছে আরও ৩২ হাজার ৯০৪টি ভূমিহীন পরিবার। এসব উপকারভোগীদের একজন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের খোকশাবাড়ী গ্রামের মেয়ে আজিজা সুলতানা স্মৃতি।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এসব ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে বিভিন্ন এলাকার উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যারা কথা বলেন তাদের একজন কলেজ ছাত্রী আজিজা সুলতানা স্মৃতি। ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত আজিজা সুলতানা বলেন, ‘আমার বাবা নাই। আমার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঈদের উপহার হিসেবে আপনার দেওয়া একটি ঘর পেয়েছি। ঈদে ঘর পেয়ে আমরা খুবই খুশি। এমন খুশির ঈদ আমরা কখনো পাইনি। ’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আজিজা বলেন, ‘আমার আগে পড়াশোনা করার মতো কোনো স্থায়ী জায়গা ছিল না। এখন একটা স্থায়ী জায়গা হয়েছে। আমি এখন আগের চেয়ে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারবো। ’

প্রধানমন্ত্রীকে সিরাজগঞ্জ যাওয়ার দাওয়াত দিয়ে আজিজা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের সিরাজগঞ্জের পক্ষ থেকে আপনার দাওয়াত থাকলো। প্রধানমন্ত্রী আপনাকে সামনে দেখার খুবই ইচ্ছে আমাদের। আপনি সময় পেলে অবশ্যই আমাদের মাঝে আসবেন। প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি। ’

আশ্রয়ণ প্রকল্পে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাওয়া শিশুদের পড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আজিজা সুলতানা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি দোয়া করবেন আমি যেন এই আশ্রয়ণের ছোট ছোট বাচ্চাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় উৎসাহিত করতে পারি। ’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে আজিজা আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমরা সবাই আপনার জন্য দোয়া করি। আপনি যেন বার বার প্রধানমন্ত্রী হয়ে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাদের জন্য দোয়া করবেন আমরা যেন সুনাগরিক হয়ে আপনার দেখানো পথে চলতে পারি। দেশের হয়ে কাজ করতে পারি। ’

প্রধানমন্ত্রী আজিজার প্রতি ভালোবাসা ও দোয়া জানিয়ে বলেন, ‘খুব খুশি হলাম তোমার কথা শুনে। তুমি ভালো করে মন দিয়ে পড়াশোনা করো। তোমরা আমাদের নতুন প্রজন্ম। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হবে। এবং এদেশকে সব সময় এগিয়ে নিয়ে যাবে। সবাইকে আমার দোয়া এবং ভালোবাসা জানাচ্ছি। ’

সিরাজগঞ্জ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের পোড়াদিয়া বালিয়া, বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের হাজিগাঁওয়ের উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।

একযোগে সারাদেশের উপকারভোগীদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঘরের চাবি তুলে দেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

তৃতীয় ধাপে এসব ঘর প্রদানের আগে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ঘর পেয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি পরিবার। তৃতীয় ধাপের আরও ৩২ হাজার ৭৭০টি ঘর নির্মাণাধীন রয়েছে।

আশ্রয়ণের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চেয়ে তৃতীয় ধাপের ঘরগুলো অনেক বেশি টেকসই। তৃতীয় ধাপে একেকটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। তৃতীয় ধাপের ঘরগুলোতে আরসিসি পিলার, গ্রেড ভিম, টানা লিংকটারসহ বেশ কিছু বিষয় সংযোজন করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙন কবলিত ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল মানুষকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘আশ্রয়ণ’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন তৎকালীন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। এ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২২ সালে মার্চ পর্যন্ত ৫ লাখ ৭ হাজার ২৪৪ ভূমিহীন এবং গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীদের মধ্যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়সহ সমাজের পিছিয়ে পড়া ভাসমান বিভিন্ন জনগোষ্ঠীও রয়েছে।

আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেল ৩৩ হাজার পরিবার

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।