ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধে ফাটল, হতাশায় কৃষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২২
হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধে ফাটল, হতাশায় কৃষক

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের কৃষকদের আয়ের একমাত্র ভরসা বোর ফসল। আর এই বোর ফসল পানিতে তলিয়ে গেলে আর কিছুই করার থাকে না।

প্রতি বছর সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে প্রায় ২ লাখ ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ করেন জেলার কৃষকরা। আর এই ফসল যাতে পানিতে তলিয়ে না যায় সেজন্য সরকার থেকে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য মোটা অংকের টাকা বরাদ্দ আসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে। এ বছরও বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

শনিবার (২ এপ্রিল) টাগুয়ার হাওরের নজরখালি বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করতে থাকে হাওরে। কিন্তু এই বাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে না বলে দাবি করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৭ মিলিমিটার। রোববার (৩ এপ্রিল) বিকেলে ৩টায় পানি উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৪.৫০ মিটার যা এখনও বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। যদি পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে তা হলে দ্রুত নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে যেতে পারে।

এ দিকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। এর ফলে সেই পানি হাওরে প্রবেশ করবে যদি বাঁধ ভেঙে যায়। গতকাল পানির চাপেই মূলত নজরখালি বাঁধ ভেঙেছে। কিন্তু বাঁধ দেওয়া হয় মূলত পানি আটকানোর জন্য। কোটি কোটি টাকা ব্যয় করার পরও যদি বাঁধ ভেঙে যায় তাহলে ফসল রক্ষা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে নজরখালি বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে প্রায় ১২০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে পানির নিচে। এই ধানগুলো পানির নিচে থেকে পচে যাবে।  

সুনামগঞ্জ তাহিপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের গইনা কড়ি হাওর, এরাইল্লার হাওর, সন্নাসী হাওর, প্লইল্লার বিল হাওর, মাটিয়ান হাওর শনির হাওর। দিরাই উপজেলার তোফানখালি হাওরসহ অনেক বড় বড় হাওরের বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

হাওর রক্ষা বাঁধ কেন দুর্বল হল কেন বা ফাটল দেখা দিয়েছে এ ব্যাপারে এখন পানি উন্নয়ন বোর্ড কী পদক্ষেপ নিবে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

তাহিপুর উপজেলার কৃষক শামছু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, মাটিয়ান হাওরে আমার প্রায় ৩ একর জমি রয়েছে। সেখানে বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যদি বাঁধ ভাঙে এক দানাও ধান পাবো না এ বছর।  

হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদ নূর আহমদ বলেন, বাঁধের কাজ নিয়ে প্রথম থেকে চোর-পুলিশ খেলা চলছিল। আমরা বিভিন্ন সময় সংবাদ সম্মেলন করেছি। কিন্তু এরপরও পানি উন্নয় বোর্ডের টনক না নড়ায় আমরা মানববন্ধন করি। কিন্ত তারা সব সময় বলে আসছে যে বাঁধের কাজ ভাল হচ্ছে বাস্তবে তার ঠিক উল্টো হয়েছে তার ফলাফল আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।