ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বসুন্ধরার সহায়তায় সায়েরার স্বপ্নের নীড়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২২
বসুন্ধরার সহায়তায় সায়েরার স্বপ্নের নীড় সায়েরা খাতুনের সঙ্গে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান (ডানে)

কক্সবাজার: সায়েরার কপালে অবশেষে জুটেছে একটি স্বপ্নের নীড়। কত চোখের জল তার গড়িয়েছে একটি ঘরের জন্য।

কিন্তু ঘরতো নয়, পৈত্রিক ভিটার এক হাত জায়গাও এতদিন খুঁজে পাননি তিনি।

জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ শুভসংঘের সদস্যদের নজর কাড়ে বিষয়টি। সায়েরার সুখ-দুঃখের ভাগিদার হতে এগিয়ে যান শুভসংঘের সদস্যরা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় অনেক দেন-দরবার করে পৈত্রিক ভিটার একটি জায়গার ব্যবস্থা হয়। সেখানেই বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে অসহায়দের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ কর্মসূচির আওতায় তৈরি করে দেওয়া হয়েছে সায়েরার স্বপ্নের নীড়।

কক্সবাজারের বাঁকখালী নদের উত্তর পাশে খুরুশকুল ইউনিয়নের তেতৈয়া সিকদার পাড়ার অভাগা নারী সায়েরা। পাঁচ বোন আর দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় তিনি। পিতৃ-মাতৃহীন সায়েরার দুই ভাইয়ের আলাদা সংসার। তিন বোন স্বামীর ঘরে। অবিবাহিত কনিষ্ঠ বোন থাকে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে। এক যুগেরও বেশি সময় আগে এলাকার বাচা মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সায়েরার। এক সন্তান জন্ম নেওয়ার পর মারা যায়। পরে আর কোনো সন্তান আসেনি। বেশ কয়েক বছর আগে স্বামী বাচা মিয়া চলে যান অন্যত্র। তার খোঁজও নেন না।

নিঃসন্তান ও স্বামী পরিত্যক্তা সায়েরা ছিলেন এক অনিশ্চিত যাত্রার পথিক। থাকার জায়গাও ছিল না কোথাও। মানুষের ঘরে কাজ করেই রাত কাটাতে হতো তাকে। বঞ্চিত ছিলেন পৈত্রিক ভিটা থেকেও। অবশেষে শুভসংঘের সদস্যরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে পৈত্রিক ভিটার এক কোণে বাঁশঝাড়ে তার জন্য এক চিমটি জায়গার ব্যবস্থা করেন। সেই জায়গাতেই দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে টিনের চালা, বেড়া ও পাকা পিলারের একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) দুপুরে স্বপ্নের নীড়টি সায়েরা খাতুনের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়েছে। সায়েরা খাতুন তার প্রতিক্রিয়ায় বসুন্ধরা গ্রুপের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।

এ উপলক্ষে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ আয়োজিত অনুষ্ঠানে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সায়েরা খাতুনের কাছে ছোট্ট ঘরটি তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, দেশে শিল্পপতি, কোটিপতি আর শিল্প উদ্যোক্তার অভাব নেই। অভাব কেবল মানবিক কাজের উদ্যোক্তার। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের এরকম মানবিক কাজের উদ্যোগ সত্যিই আমাদেরও অনুপ্রেরণা জোগায়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এহেসান উল্লাহ, সাবেক সদস্য এ এম জাহেদ উদ্দিন চৌধুরী, কালের কণ্ঠ শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক জাকারিয়া জামান, কালের কণ্ঠ শুভসংঘ কক্সবাজার জেলা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা তোফায়েল আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

খুরুশকুলের একই স্থানে আরও ৬ জন এবং ঝিলংজা ইউনিয়নে দুই অসহায় নারীকে দেওয়া হয়েছে বসুন্ধরার সহায়তা। এসবের মধ্যে তিন নারীকে দেওয়া হয়েছে সেলাই মেশিন, তিনজনকে ১২টি ছাগল ও ২০টি মুরগি এবং অপর ২ জনকে শিক্ষা উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২২
এসবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।