ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুই শিশুকে স্কুলে রেখেই তালা, কাঁদছিল ১ ঘণ্টা ধরে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২২
দুই শিশুকে স্কুলে রেখেই তালা, কাঁদছিল ১ ঘণ্টা ধরে

বরিশাল: বরিশাল নগরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই শিশু শিক্ষার্থীকে ভেতরে রেখেই স্কুল তালবদ্ধ করে বাড়ি চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে বাচ্চাদের ডাক চিৎকার ও কান্নাকাটির শব্দ পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার (২ মার্চ) বিকেলে বরিশাল নগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুদঘাটা এলাকার ইন্দ্রকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।

তালাবদ্ধ থাকা চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মারজান শিকদারের মা শিরিন আক্তার আঁখি বলেন, বুধবার স্কুল ছুটির সময়ে বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে শিক্ষিকা মাকসুদা বেগম তার ছেলে মারজান ও চতুর্থ শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী মুনমুনকে অঙ্ক করতে বলেন। এবং অঙ্ক শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি যাওয়া যাবে না বলেও জানান ওই শিক্ষিকা। কিন্তু শিক্ষিকা মাকসুদা বেগম অঙ্ক করতে দিয়ে নিজেই বাড়ি চলে যান। আর শিক্ষার্থী দু’জন নিজেদের মত করে অঙ্ক করতে থাকে। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষিকাসহ সবাই চলে গেলে দপ্তরিও স্কুল গেটে তারা মেরে দেন।

তিনি আরও বলেন, অঙ্ক শেষ করে রুম থেকে বেড়িয়ে ওই শিশুরা গেটে তালা মারা দেখে ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা তাদের চিৎকার ও কান্নাকাটির শব্দ পেয়ে স্থানীয় একটি মেয়ে এগিয়ে আসে। তবে স্কুলের গেটে তালা থাকায় ভিতরে যেতে পারেনি সে। পরে মারজানের কাছ থেকে তার বাবা জামাল শিকদারের মোবাইল নম্বর নিয়ে তাকে ফোন করে। তার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে স্কুলে ছুটে আসি। কিন্তু তখনও স্কুলের গেটে তালা ছিল। পরে স্কুলের দপ্তরি ইমরানের বাড়িতে যাই। কিন্তু ইমরান রেগে গিয়ে অপমান অপদস্ত করেন। পরে ইমরান স্কুলের গেটে খুলে দিলে পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিশু দুটিকে উদ্ধার করে। পরে স্থানীয়দের ভয়ে দপ্তরি স্কুলের ভিতর থেকে নিজেকে তালাবদ্ধ করে রাখে।

এ ঘটনায় মারজানের মা দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক বিচার দাবি করেছেন।

স্থানীয়রা মনে করেন, যদি রাত পর্যন্ত শিশু দুটি ওখানে থাকতো তবে অন্ধকারে আতঙ্কিত হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারতো। তারা এরকম জ্ঞানহীন শিক্ষক-কর্মচারীরা বিরুদ্ধে শান্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

এ ব্যপারে স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা তানিয়া সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

যদিও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেননি স্বীকার করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মজুমদার বলেন, এটি একটি গর্হিত কাজ হয়েছে। সরেজমিনে জানতে স্কুল পরিদর্শন করেছি। থানা শিক্ষা অফিসারকে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে প্রতিবেদন পেয়েছি। আগামী রোববারের মধ্যেই এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলা‌দেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২২
এমএস/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।