ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খেলাকেন্দ্রীক জুয়ায় অর্থপাচার!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২২
খেলাকেন্দ্রীক জুয়ায় অর্থপাচার! গ্রেফতাররা

ঢাকা: আইপিএল, বিপিএল, সিপিএলসহ বিভিন্ন খেলায় বাজি ও বেটিংয়ে ভার্চ্যুয়াল কারেন্সি ব্যবহার ও ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারকারী এজেন্টসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেফতাররা হলেন- তোফায়েল ইসলাম রাসেল (২৭), শাকিল খান (৩৫), পারভেজ (২৪), সাগর (৩০), ও জিয়াউল হক রনি (৩৯)।

বুধবার (৩ মার্চ) কেরানীগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

সিআইডি জানায়, বেট ৩৬৫ ও ৯ উইকেটসহ বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে ভার্চ্যুয়াল কারেন্সি ব্যবহার করে জুয়া খেলার আয়োজন করছিল চক্রটি।

সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, গ্রেফতাররা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হয়। পরে বেকার যুবকদের টার্গেট করে অল্প সময়ে প্রচুর টাকা উপার্জনের লোভ দেখাতে থাকেন চক্রটি। এরপর ধাপে ধাপে অনলাইন গ্যাম্বলিং বেটিংয়ে আসক্ত করে তোলে। এছাড়া তারা অবৈধভাবে ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারও করছিল।

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার তোফায়েল ইসলাম রাসেল অনার্সের ছাত্র। তার ইংরেজি ভাষায় বিশেষ দক্ষতা থাকায় অনলাইন গ্যাম্বলিংয়ে ভার্চ্যুয়াল ডলার সংগ্রহ করে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশি মুদ্রায় পরিণত করার জন্য নেটেলার, স্ক্রিল নামক ভার্চুয়াল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে।  

এছাড়াও সে নিজে ইংল্যান্ড ভিত্তিক বেট৩৬৫ নামক অনলাইন গেম বিলিং অ্যাকাউন্ট বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করে টাকার বিনিময়ে অন্যান্যদের মধ্যে সরবরাহ করতেন। পরে তাদের কাছে নেটেলার, স্ক্রিল নামক ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা সরবরাহ করেন।

অনলাইন গ্যাম্বলিং চক্রের এজেন্ট প্রধান তোফায়েল ইসলাম রাসেল ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করে আসছিলেন।

তিনি বলেন, রাসেল নিজে এই বিষয়ে বিশেষভাবে পারদর্শী হওয়ায় সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ডলার বাই অ্যান্ড সেলিং’ গ্রুপের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই লক্ষ্যে ভার্চ্যুয়াল ইউএস ডলার অনলাইন জুয়াড়িদের মধ্যে কমিশন ভিত্তিতে সরবরাহ করে। কোনো কারণে ভার্চ্যুয়াল ইউএস ডলার অনলাইনে আটকে গেলে রাসেল তা ছাড়াতেও বিশেষভাবে পারদর্শী।

গ্রেফতার শাকিলের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, শাকিল রাসেলের বিশেষ সহযোগী এবং মাহিম খান (ছদ্মনাম) নামে ব্যবসায়ী হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে ৯উইকেট নামে অপর একটি অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট ও বেট৩৬৫ নামের ওয়েবসাইটে অনলাইন গ্যাম্বলিং করে থাকে। শাকিল নিজেকে ৯উইকেটের স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দেয়।

চক্রটি যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও ধ্বংসের উদ্দেশ্যে অনলাইনে জুয়া খেলে ডিজিটাল প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধ ই-ট্রানজেকশন ও সহায়তা করে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করাসহ নিজেদের নাম-পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশ ধারণ করেন। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২২
পিএম/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।