ঢাকা, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মশা তাড়াতে তাপসের কদম, আইভীর নিম-তুলসী 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২২
মশা তাড়াতে তাপসের কদম, আইভীর নিম-তুলসী  সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম পর্যালোচনায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা

ঢাকা: মশা তাড়াতে জৈব বা ভেষজ উপাদান প্রয়োগ পদ্ধতি অনেক পুরনো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপের মধ্যে কীটনাশকের পাশাপাশি জৈব পদ্ধতি প্রয়োগে জোর দেওয়া হচ্ছে।

মশা নিধন বিষয়ে সরকারের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সে সব বিষয়েই বলেছেন দুই মেয়র।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস কদম গাছ এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী জোর দিয়েছেন পুদিনা, তুলসী ও নিম গাছে। মেয়র তাপসের আহ্বানে কদম গাছ লাগানোতেও সায় দিয়েছেন আইভী।

শীতকাল শেষে দেশে মার্চ থেকেই মূলত মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। বর্ষা মৌসুমের আগেই ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বাহক এডিস মশা গত কয়েক বছরে বেশ ভুগিয়েছে নগরবাসীকে।

বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) সারাদেশে ডেঙ্গু ও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য চলতি বছরের প্রথম আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বসেন মন্ত্রী, সচিব, মেয়রসহ বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

মশা নিধনে জৈব নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে নজর দিচ্ছি জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, আমাদের জলাশয়, খাল, পুকুরে হাঁস, তেলাপিয়া মাছ, ব্যাঙ ছাড়ছি।

এই মৌসুমে মশা অনেক কম দাবি করে ফজলে নূর তাপস মশা নিধনে কদম গাছের জুড়ি নেই বলে জানান। তবে ছাদ বাগানের সঠিক পরিচর্যা না করায় মশার উপদ্রুব বেড়ে গিয়ে সেটি বিষফোঁড়া হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, এখানে সব সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আছেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে গাছ লাগাই। সব সংস্থাই বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় ও নির্দেশনা রয়েছে। আমি আপনাদের বিভিন্নভাবে অনুরোধ করবো, নজরে আনবো। আপনারা বিভিন্ন সময়ে যে গাছ লাগান, যদি কদম ফুল গাছ লাগান, এটা আমাদের জন্য সহায়ক হবে। কদম ফুল গাছে যে জৈব বিষয় রয়েছে, যেটা মশা নিয়ন্ত্রণ করে এবং সেখানে যে একটি নির্দিষ্ট পাখি, ফিঙে পাখি কদম ফুল গাছে থাকে এবং বাসা বাঁধে, সেটা সহায়ক হয় (মশক নিধনে)। কারণ ফিঙে পাখিগুলো মশক এবং অন্যান্য পোকামাড়ক নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

মেয়র তাপস বলেন, আমরা জৈব কার্যক্রমটা আরও জোরদার করতে চাই। এখন এক ভাগও নাই। আমরা এটাকে দশভাগে নিয়ে আসতে চাই। কারণ দীর্ঘ মেয়াদে কীটনাশক ব্যবহার করা শরীরের জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং বিপজ্জনক। সেখান থেকে আরও সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে সবার প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে—আপনারা কদম গাছ যত বেশি লাগাবেন আমাদের জন্য সেটা সহায়ক হবে।

কদম গাছের ফর্মুলা দেওয়ায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র আইভী মেয়র তাপসকে ধন্যবাদ জানিয়ে মশা দমনে তার জৈব পদ্ধতির কথা সভায় তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ধন্যবাদ তাপস ভাইকে, আপনি কদম গাছের কথা বলাতে। আমি আরও কদম ফুল কম লাগাতে চাচ্ছিলাম। কারণ অনেক সময় এটা নোংরা করে ফেলে। আমি নিমগাছ একটু বেশি লাগাই। তুলসী, নিম, আর পুদিনা একসাথে লাগালে অনেক সময় মশা মরে যায়। এটাতে বেশি জোর দিয়েছিলাম। কদমটা একটু পরিহার করতাম। এখন আবার কদমের দিকে জোর দেব।

আইভী আরও বলেন, মশা নিধনে আমরা গতানুগতিক কাজগুলো করে যাচ্ছি। ইদানীং মশার প্রকোপ বেড়েছে। আশা করি একটা বড় ঝড় বা বৃষ্টি হলে মশা ন্যাচারালি কিছু মারা যায়, এটা সব সময় হয়। তারপর আস্তে আস্তে কমে আসে।

দ্বিতীয় দফায় মেয়র নির্বাচিত হয়ে সচিবালয়ে প্রথম সভায় আসায় আইভীকে অভিনন্দন জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এবং উপস্থিত মেয়ররা। সভায় ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম সিটির মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, গাজীপুর সিটির ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. আসাদুর রহমান কিরণ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন—স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২২
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।