ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সিলেটে রেল লাইনের পাশে কর্মচারীর মরদেহ, দোকান মালিক আটক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
সিলেটে রেল লাইনের পাশে কর্মচারীর মরদেহ, দোকান মালিক আটক

সিলেট: ধারালে অস্ত্র দিয়ে কাটা হয় গলা, দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন মস্তক। মুষ্টিবদ্ধ ডান হাত, বাম হাতের বগল থেকে পেট পর্যন্ত ধারালো অস্ত্রের আঘাত।

বুকে থেঁতলানো জখম। পেছনে কোমরের উপরিভাগে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বেরিয়ে এসেছে নাড়িভুঁড়ি। দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন মস্তক ও বাম হাত পাওয়া যায়নি।

এমন নৃশংসভাবে খুন হওয়া নয়ন দেবনাথ (১৮) নামে এক তরুণের মরদেহ সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে মোমিনছড়া চাবাগান সংলগ্ন রেল লাইনের পাশে থেকে গত শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ।

দুর্বৃত্তরা খুন করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার দেহ থেকে মস্তক ও হাত বিচ্ছিন্ন করে অজ্ঞাত স্থানে ফেলে দিয়েছে। পুলিশ দেহের অবশিষ্ট অংশগুলোর খুঁজে রয়েছে।

আর মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করতে গিয়ে খোদ পুলিশ কর্মকর্তাও ভড়কে যান। এমন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এর আগে চোখে পড়েনি ওই কর্মকর্তার।

নিহত নয়ন দেবনাথ (১৮) নামে ওই তরুণ কুমিল্লা জেলার দৌলতপুর গ্রামের দিলীপ চন্দ্র দেবনাথের ছেলে। তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের উপমা ফ্যাশন নামে একটি কাপড়ের দোকানে কর্মচারী ছিলেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে সিলেট রেলওয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

রেলওয়ে সিলেট রিজিওনের পুলিশ সুপার শেখ শরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দুর্বৃত্তরা নয়ন দেবনাথকে হত্যার পর মাথা ও বাম হাত বিচ্ছিন্ন করে অজ্ঞাত স্থানে ফেলে দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে পারলেও দেহের বিচ্ছিন্ন অংশগুলোর খোঁজ মিলেনি এখনো। আমরা সেগুলো খোঁজে বের করার চেষ্টা করছি। সেই সঙ্গে হত্যার কারণ জানতে উপমা ফ্যাশন নামক কাপড়ের দোকান মালিক দুর্জয় দেবনাথ ভৌমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি।

সিলেট রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আলীম শিকদার বলেন, নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর আমরা মামলা নিয়েছি। আশা করি দ্রুতি এর কিনারা করতে পারবো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হত্যার ঘটনা নিহত নয়নের বাবা বাদী হয়ে সিলেট রেলওয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি নামোল্লেখ করতে চাইলেও পুলিশ অজ্ঞাত আসামি করে মামলা নেয়।

নয়নের বাবার অভিযোগ, তার ছেলে ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের উপমা ফ্যাশন নামে একটি কাপড়ের দোকানে কর্মচারী ছিল। সেই দোকানের মালিক দুর্জয় দেবনাথ ভৌমিক বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়নের মাকে মোবাইলে ফোনে কল দিয়ে বলেন, ‘ইদানীং নয়ন অস্বাভাবিক চলাফেরা করছে। ওই রাতে নয়ন একপর্যায়ে তার মাকে মোবাইলে ফোনে কল দিয়ে বলে, ‘আমাকে মেরে ফেলবে মা’।

তখন নয়নের মা দোকানের মালিক দুর্জয়ের চাচা চন্দন দেবনাথ ভৌমিকের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বলেন, ‘অন্তত রাত পর্যন্ত তার ছেলেকে দেখেশুনে রাখতে। ’ এরপর রাত সাড়ে ১০টা থেকে নয়নের মোবাইল ফোন বন্ধ পান তার বাবা-মা। এরপর শুক্রবার বেলা ২টায় নয়নের মোবাইলে ফোন দেন তার বাবা-মা। অপর প্রান্ত থেকে রেলওয়ে পুলিশের একজন সদস্য মরদেহ উদ্ধারের খবর দিয়ে সিলেট রেলওয়ে থানায় আসতে বলেন।

নয়নের বাবা দিলীপ চন্দ্র দেবনাথ জানান, ময়নাতদন্ত শেষে নয়নের মরদেহ কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বাদী হয়ে সিলেট রেলওয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে চাইলে রেলওয়ে পুলিশ অভিযোগে আসামিদের নাম লিখেননি। শুধু অভিযোগ ও ঘটনার বর্ণনা লিখেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
এনইউ/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।