ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

তিন মাসেও সংস্কার হয়নি তিস্তা ব্যারেজের ফ্লাড বাইপাস

খোরশেদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২২
তিন মাসেও সংস্কার হয়নি তিস্তা ব্যারেজের ফ্লাড বাইপাস

লালমনিরহাট: অসময়ের ভয়াবহ বন্যায় ভেঙে যাওয়া ফ্লাড বাইপাস দীর্ঘ তিন মাসেও সংস্কার হয়নি। ফলে আসন্ন বন্যা মোকাবিলা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় তিস্তার বাম তীরের মানুষ।

জানা গেছে, ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ঐতিহাসিক এ তিস্তা নদী। যা লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিশে যায়। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার হলেও বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার।  

ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভারত সরকার এক তরফা তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় শীতেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয়। বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি প্রবাহের ফলে বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তিস্তার বাম তীরের জেলা লালমনিরহাট।

তিস্তা নদীর পানি সেচ কাজে ব্যবহার করতে আশির দশকে তৎকালিন সরকার লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার সংযোগে তিস্তা নদীর ওপর তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্প নির্মাণ করে। যা লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলাকে সংযুক্ত করেছে। ব্যারাজ রক্ষার্থে বাম তীরে লালমনিরহাট অংশে ফ্লাড বাইপাস নির্মাণ করা হয়। অতিরিক্তি পানি যাতে ফ্লাড বাইপাস দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্যারেজ রক্ষা পায়। এই ফ্লাড বাইপাসের ভাটিতে নির্মিত হয় হাজারও বসতবাড়ি ও স্থাপনা।

গত বছর ২০ অক্টোবর অসময় হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। ওই দিন তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে ব্যারেজের ফ্লাড বাইপাস ভেঙে বাম তীরে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। ভেসে যায় ঘরবাড়ি, ভেঙে যায় রাস্তাঘাট। বন্যার তিন মাস অতিবাহিত হলেও ভেঙে যাওয়া ফ্লাড বাইপাস সংস্কার করা হয়নি। ফলে লালমনিরহাট নীলফামারীর যোগাযোগেও চরম দুর্ভোগে পড়েছে দুই জেলার মানুষ।  

অপরদিকে আসন্ন বন্যায় আবারও বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা করছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ। বন্যার আগে সংস্কার না হলে তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে ব্যারেজ শুন্যে পড়ে থাকার আশঙ্কা স্থানীয়দের।

গড্ডিমারীর বাসিন্দা সোলায়মান আলী বলেন, গত বন্যায় ফ্লাড বাইপাস ভেঙে ঘরবাড়ি ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। এখনও ফ্লাড বাইপাস সংস্কার করা হয়নি। আগামী বন্যার আগে সংস্কার না হলে ভয়াবহ বিপদ হতে পারে। এছাড়াও বন্যার আগে সংস্কার না হলে নদীর গতিপথও পরিবর্তন হতে পারে। এমন হলে তিস্তা ব্যারেজ শূন্যে পড়ে থাকবে। তাই দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফ্লাড বাইপাস সংস্কার করতে ৩০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ এলে সংস্কার করা হবে। তবে আগামী বন্যার আগেই এটি সংস্কারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।