ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চালকের আসনে অন্য গাড়ির হেলপার, বাসচাপায় আহত ৩

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২২
চালকের আসনে অন্য গাড়ির হেলপার, বাসচাপায় আহত ৩ আটক হেলপার জীবন

বরিশাল: যাত্রীবাহি বাসে চাবি রেখে চা পান করছিলেন  চালক, সুপারভাইজার ছিলেন কাউন্টারে, আর হেলপার ব্যস্ত ছিলেন বক্সে যাত্রীদের মালামাল ওঠাতে। সেই সুযোগে লোকাল বাসের এক হেলপার এসে চালকের আসনে বসে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সামনে এগোনোর চেষ্টা চালায়।

মুহূর্তের মধ্যেই একটি অটোরিকশা, একটি ব্যাটারি চালিত রিকশা ও একটি প্যাডেল চালিত রিকশাকে চাপা দেয় বাসটি। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন তিনজন।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ৯ টার দিকে বরিশাল নগরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই থ্রি-হুইলারের চালকরা কুয়াকাটা থেকে ঢাকাগামী সাকুরা পরিবহনের ওই বাসসহ কথিত চালক জীবনকে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করেন।

আটক জীবন জানান, তিনি খুলনার খালিশপুরের টিঅ্যান্ডটি রোডের বাসিন্দা রফিক মিয়ার ছেলে এবং বরিশাল এক্সক্লুসিভ নামের বাসের চালক। তাকে সাকুরা নামের ওই পরিবহনের হেলপারই বাসটিকে সড়কের পাশে সরাতে বলে। যদিও ঘটনার পর দুর্ঘটনা কবলিত বাসের চালক-হেলপার পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাসের যাত্রীরা জানান, কুয়াকাটা থেকে বাসটি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। বরিশালের নথুল্লাবাদে এসে বিরতি দেয় এবং রাত ৯ টার সময় পুনরায় যাত্রা শুরু করার কথা থাকায় তারা বাসের ভেতরেই ছিলেন। কিন্তু চালক ও হেলপার না থাকার সুযোগে বাসে জীবন নামের ওই যুবক উঠে চালকের আসনে বসে চালানো শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যেই সামনে থাকা কয়েকটি থ্রি-হুইলারকে চাপা দেয় বাসটি। এতে কয়েকজন আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত রতন, শাহারিয়ার ও বেল্লাল নামে তিনজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর স্থানীয়রা ওই যুবকসহ বাসটিকে আটক করে।

পরে পুলিশ এসে  বাসসহ তকে নিজেদের জিম্মায় নেয়। দীর্ঘসময় পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ সদস্যরা বাসযাত্রীদের নেমে যেতে বলে। এসময় যাত্রীরা বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়ার অনুরোধ জানালে তাতে কেউ সাড়া দেয়নি। পরে যাত্রীরা সাকুরা পরিবহনের ঢাকাগামী অন্য একটি বাসের গতিরোধ করে। এসময় ওই বাসের হেলপার যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করলে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, সাংবাদিকরা সেই দৃশ্য ধারণ করতে গেলে পুলিশের সামনেই তাদের সঙ্গেও অসদাচরণ করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে রাত ১১টার দিকে আরেকটি বাস দেওয়া হয়।

সাকুরা পরিবহনের বরিশাল কাউন্টারের ম্যানেজার মো. আনিসুর রহমান জানান, সবার অগোচরে বরিশাল এক্সপ্রেস নামের লোকাল বাসের হেলপার যাত্রীবাহি বাসটিতে উঠে যায় এবং সেটি চালানো শুরু করা মাত্রই দুর্ঘটনা ঘটে। যার কারণে এ দুর্ঘটনা সে, আমাদের বাসের কেউ নয়। ঘটনার সময় চালক পাশের চায়ের দোকানে যায় এবং হেলপার বক্সে যাত্রীদের মালামাল তুলছিল।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় ওই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। আর বাসটিকেও আটক করায় যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে আমরা একটি এসি বাস দিয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যে সেই বাসে যাত্রীদের ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হবে।

আর সাংবাদিক ও যাত্রীদের সঙ্গে যে ব্যক্তি অসদাচরণ করেছেন সেও সাকুরা পরিবহনের কেউ নয় বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার এসআই সুমন জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে পাঠিয়েছি। জীবন নামের এক যুবককে আটক ও সাকুরা পরিবহনের বাসটিকে জব্দ করেছি। এছাড়া সাকুরা পরিবহনের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে যাত্রীদের জন্য বিকল্প বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আহতদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শরীরের একাধিক অংশের হাড় ভেঙে যাওয়ায় আহত তিনজনকে অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়:১০০৩ ঘণ্টা, ২৯ জানুয়া‌রি, ২০২২
এমএস/এমএমজেড

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।