ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পাবনায় নিয়োগ পরীক্ষায় হাঙ্গামা: জেলা প্রশাসন-আ.লীগ মুখোমুখী

শাহীন রহমান, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১০

পাবনা: জেলা প্রশাসনে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগের পরীক্ষায় হাঙ্গামার ঘটনায় পাবনা জেলা প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ মুখোমুখী অবস্থান নিয়েছে। গ্রহণ করেছে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি।



রোববার রাতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পরীক্ষা হলে ভাঙচুর, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও জেলা প্রশাসনের এডিসিসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএস সার্ভিস ক্যাডার) এক জরুরি সভা করে।

অ্যাসোসিয়েশন পাবনা জেলা শাখার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ড. এএফএম মনজুর কাদিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় ৬টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় নিয়োগ পরীক্ষায় ভাঙচুর ও পরবর্তী পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে কর্মেক্ষেত্র নিরাপত্তাহীনতার কারণেএ জেলায় কর্মরত বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সব কর্মকর্তা একযোগে বদলীর আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এছাড়া নিয়োগ পরীক্ষা পণ্ড ও জেলা প্রশাসনকে দায়ী করে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির প্রতিবাদে মঙ্গলবার সংশিষ্ট কর্মকর্তারা কলম বিরতি ও কালোব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন করবেন।

রোববার বিকেল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলা এ সভায় জেলা প্রশাসনের সব কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলার বিসিএস ক্যাডাররা উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে রোববার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে।

মানববন্ধন থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) বিরুদ্ধে দুনীর্তির অভিযোগ এনে ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের অপসারণের দাবি জানানো হয়।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের অপসারণ করা না হলে জেলা আওয়ামী লীগ বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসুচি গ্রহণ করবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
 
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকাল ৯টায় পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৩০/৪০ জন কর্মী পরীক্ষা কেন্দ্রে হামলা চালায়। এ সময় তারা পরীক্ষার্থীদের মারপিট করে পরীক্ষা বন্ধ করে দেয় এবং প্রশ্নপত্র পুড়িয়ে ফেলে। হামলাকারীরা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমাম উদ্দিন কবিরসহ ছয় সরকারি কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করে। ভাঙচুর করে  তাদের ৪টি গাড়ি।

ঘটনার পর কর্তৃপ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে। শুক্রবার রাতেই সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দু’জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সুইটকে প্রধান এবং বর্তমান সভাপতি আহমেদ শরীফ ডাবলুকে ২য় আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে সদর থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার দুপুরে জেলা যুবলীগের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সম্পাদক রায়হানকে (তরিকুল) গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।

এ ঘটনায় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পাবনা সদর আসনের সাংসদ ও  জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা শনিবার দুপুরে স্থানীয় প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। রাতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও  সমাবেশ করে।

বাংলাদেশ সময় ০৩০০ ঘণ্টা, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ