ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এসডিজি বাস্তবায়ন

তৃণমূল পর্যায়ে নারী উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ব্র্যাক

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২১
তৃণমূল পর্যায়ে নারী উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ব্র্যাক

এক সময় স্বামীর নির্যাতনের বিভীষিকা যার ন্যূনতম বাঁচার স্বপ্নটাই কেড়ে নিয়েছিল, সেই নারী এখন স্বপ্ন দেখেন স্থানীয় নারী প্রতিনিধি হিসেবে বাল্যবিয়ের বিপক্ষে এলাকায় জনমত গঠন ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করার। তার সংকল্প জাগ্রত নারীদের ‘আইকন’ হিসেবে সমাজে আলো ছড়াবেন।

ব্র্যাকের পার্টনার এনজিওগুলোর উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় এ কথা জানালেন কক্সবাজারের উখিয়ার সাজেদা বেগম। তার বাড়ি রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা বাগান পাহাড় গ্রামে।

এরকম নির্যাতিত ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম ও স্বপ্নের গল্পটা যেন তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে যায় এবং সমাজে বাস্তবায়ন হয়—সে লক্ষ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা সাজাচ্ছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। একইসঙ্গে সংস্থাটির পার্টনার এনজিওগুলোও এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আরও জোরালোভাবে কাজ করবে। এর পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে অন্যান্য বেসরকারি সংস্থার অংশীদারিত্বমূলক কার্যক্রম বেগবান করবে ব্র্যাক।  

সোমবার (০৬ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের একটি হোটেলে আয়োজিত ‘বার্ষিক অগ্রগতি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়’ শীর্ষক কর্মশালায় সমাপনী সেশনে বক্তারা এই অভিমত তুলে ধরেন। আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও এ সংক্রান্ত সুপারিশ তুলে ধরতে অস্ট্রেলিয়ান এইড ও ব্র্যাকের সহযোগিতায় সংস্থাটির পাঁচটি পার্টনার এনজিও এই কর্মশালার আয়োজন করে।

এই পাঁচটি এনজিও হচ্ছে—সোসাইটি ফর হেলথ এক্সটেনশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (শেড), প্রোগ্রাম ফর হেলপলেস অ্যান্ড ল্যাগেড সোসাইটিজ (পালস), অ্যালায়েন্স ফর কোঅপারেশন এইডস বাংলাদেশ (অ্যাকলাব), জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা (জেনাস) ও নোঙর।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ) মো. নাসিম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এসডিজির যে ১৭টি লক্ষ্য আছে, তা বাস্তবায়নে সরকার সচেষ্ট। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের পাশাপাশি তাদের অধিকারবোধ ও মর্যাদার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ’ তিনি ‘সামাজিক সম্প্রীতি,’ ‘ইনক্লুশন,’ ,‘জেন্ডার’-এই শব্দগুলো সঠিকভাবে বলা এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে গুরুত্বারোপ করেন।

ব্র্যাকের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির (এইচসিএমপি) আওতাধীন হোস্ট কমিউনিটি প্রোগ্রামের প্রধান মো. আব্দুল মতিন সরদার বলেন, ‘সময়ের পরিবর্তন ও প্রযুক্তির বিকাশের কারণে এনজিওগুলোকে গতানুগতিক কাজের ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। প্রজেক্ট শেষ, কাজ শেষ—এটা যাতে না হয়। বেসরকারি সংস্থাগুলোকে উদ্ভাবনী আইডিয়া নিয়ে এগুতে হবে। ’

এতে আরও বক্তব্য রাখেন নোঙ্গরের নির্বাহী পরিচালক দিদারুল আলম রাশেদ, অ্যাকলাবের নির্বাহী পরিচালক তারিকুল ইসলাম, জেনাসের নির্বাহী পরিচালক শিউলি শর্মা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পালসের নির্বাহী পরিচালক আবু মোরশেদ চৌধুরী।   

উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম জোরালো করা, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করা, সীমিত সম্পদ বিবেচনায় নিয়ে বাজেট প্রণয়ন, সংস্থাগুলোর নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী কার্যক্রম বাস্তবায়ন, দাতা সংস্থা ও ব্র্যাকের মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ পরিচালনা করা, কর্মী সুরক্ষায় সেইফ গার্ডিং ইস্যু বজায় রাখা, যথাযথভাবে প্রকিউরমেন্ট পলিসি অণুসরণ করে কাজ করা এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।  

প্রসঙ্গত, ব্র্যাকের মানবিক সহায়তা কর্মসূচি (এইচসিএমপি) স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সামাজিক সম্প্রীতি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবন মান উন্নয়ন ও নারী অধিকারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২১
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ