ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে অবদান রেখেছেন বাংলাদেশিরা 

তৌহিদুর রহমান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২১
মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে অবদান রেখেছেন বাংলাদেশিরা  হাজনাহ মো. হাশিম

ঢাকা: মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। দু, দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান।

তার ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে সকলে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে দুই দেশ।   
ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম বলেছেন, বৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদানের প্রশংসা করে মালয়েশিয়া । এই নিবেদিত বাংলাদেশি শ্রমিকরা মালয়েশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতিতে অবদান রেখেছেন। বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলানিউজ: মালয়েশিয়া বাংলাদেশিদের জন্য একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য মালয়েশিয়ার পর্যটন ভিসা কবে খুলতে পারে।  

হাজনাহ মো. হাশিম:  মালয়েশিয়া প্রকৃত বাংলাদেশিদের পর্যটকদের আসতে গুরুত্ব দেয়। ২০১৯ সালে কোভিড -১৯ মহামারির আগে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি পর্যটকের পছন্দের গন্তব্য ছিল মালয়েশিয়া। তাই আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, মহামারি শেষ হয়ে গেলে, প্রকৃত পর্যটকরা মালয়েশিয়াকে তাদের পছন্দের গন্তব্য হিসেবে বেছে নেবে । বিশেষ করে চিকিৎসা পর্যটনে সাশ্রয়ী মূল্যে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্যসেবা বিশ্বসেরা।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়া সরকার এরই মধ্যে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে কেস-বাই-কেস বেসিসে পুরো ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়া ভ্রমণকারী, দীর্ঘমেয়াদী পাসধারী এবং শিক্ষার্থীরা মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ থেকে মাই ট্রাভেল পাস মাই এন্ট্রি পোর্টালের মাধ্যমে প্রবেশের অনুমোদন, কোভিড ১৯ পিসিআর টেস্ট পরীক্ষার নেগেটিভ ফলাফল এবং বৈধ ভিসাসহ অন্যান্য কিছু বিধি মেনে মালয়েশিয়া যেতে পারবেন। এছাড়া চিকিৎসার জন্যও মালয়েশিয়া প্রবেশ করতে পারবেন।

মালয়েশিয়া এখনও কোভিড -১৯ মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় রয়েছে, তাই পর্যটনের জন্য আন্তর্জাতিক সীমানা এখনও বন্ধ রয়েছে। মালয়েশিয়ার দ্রুত টিকা প্রক্রিয়া শেষে পর্যটন পুনরুজ্জীবিত হবে বলে আশা করছি।


বাংলানিউজ: বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলা করছে। আসিয়ান ফোরামের শক্তিশালী সদস্য হিসেবে মালয়েশিয়া কীভাবে এই সমস্যা মোকাবিলায় আরও সহযোগিতা করতে পারে?

হাজনাহ মো. হাশিম: মালয়েশিয়া বরাবরই বিশ্বাস করে, রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণগুলো বের করা এই সংকটের সমাধানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসিয়ানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া মিয়ানমারকে সবসময় যথাযথভাবে প্রত্যাবাসন এবং মানবাধিকার সুরক্ষা নিশ্চিতে তাদের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

রাখাইন সংকটে সরাসরি প্রভাবিত এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) সদ্য নির্বাচিত সদস্য দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবাসনে চলমান প্রচেষ্টাকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। এ প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়া এই ধরনের প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সমর্থনকে স্বাগত জানায়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে অবশ্যই মনোযোগ প্রয়োজন, মালয়েশিয়া বিশ্বাস করে এই ধরনের অব্যাহত আন্তর্জাতিক সমর্থন অবশ্যই ইতিবাচক একটি ফলাফল বয়ে আনবে।  

বাংলানিউজ: বাংলাদেশ -মালয়েশিয়া সরকারি পর্যায়ে (জি টু জি) কর্মী রপ্তানির লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছিল। এই বিষয়ে আপনার কাছে কোনো আপডেট তথ্য আছে কি?

হাজনাহ মো. হাশিম: মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে আমরা একটি চূড়ান্ত ইতিবাচক ফলাফলের আশা করছি, যেখানে আমাদের উভয়পক্ষেরই স্বার্থ রক্ষা হবে।


বাংলানিউজ: কোভিড-১৯ লকডাউনের কারণে আটকে পড়া অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক ও শিক্ষার্থীরা মালয়েশিয়ায় ফিরতে পারছেন না, তাদের মালয়েশিয়ায় ফেরত নেওয়ার কোনো উদ্যোগ রয়েছে? 

হাজনাহ মো. হাশিম: আমি প্রথমে জোর দিয়ে বলতে চাই, মালয়েশিয়া বৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদান প্রশংসা করে। এই নিবেদিত বাংলাদেশি শ্রমিকরা মালয়েশিয়ার উৎপাদনশীল খাত ও উদীয়মান অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রেখেছেন।  

আমি আগেই বলেছি, মালয়েশিয়া সরকার ইতোমধ্যে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে কেস-বাই-কেস বেসিসে পুরো ডোজ ভ্যাকসিন নিয়ে কিছু বিধি মেনে মালয়েশিয়া যেতে পারবেন।  

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী নিয়োগ স্থানীয় শিল্প কারখানার চাহিদা থেকে নির্ধারিত হয়। মালয়েশিয়া এখন যেহেতু একটি উচ্চ আয়ের দেশের দিকে যাচ্ছে, সে কারণে আগামীতে আরও উচ্চ পর্যায়ের দক্ষ শ্রমের দিকে এগিয়ে যাবে। সম্প্রতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী 'টুয়েলভ মালয়েশিয়া প্ল্যান' য়ে এটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, যেটা আগামী পাঁচ বছরের জন্য মালয়েশিয়ার উন্নয়নের রোডম্যাপ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২১ 
টিআর/এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।