ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ছেলের পিটুনিতে হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২১
ছেলের পিটুনিতে হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধা 

সাতক্ষীরা: আবার ছেলের হাতে মার খেয়ে বাড়ি থেকে বিতাড়িত হলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক শ্রমিক নেতা বজলুর রহমান (৭২)। আহত অবস্থায় তিনি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সকালে বজলুর রহমানকে তার ছোট ছেলে আব্দুস সালাম বাবু সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

সাতক্ষীরা সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলসের সাবেক এ শ্রমিক নেতা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও লাবসা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। চাকরি শেষে তিনি মাগুরা দোতলা মসজিদের পাশে ছয় কাঠা জমি কিনে একটি দোতলা বাড়ি করেন। সেখানে তিনি বসবাস করছিলেন। তার দুই ছেলের মধ্যে আবুল কালাম সাবেক সেনাসদস্য। তিনি থাকেন ভিন্ন বাড়িতে। ছোট ছেলে আব্দুস সালাম বাবুকে নিয়ে বজলুর রহমান থাকতেন নিজের বাড়িতে।

জানা গেছে, ছোট ছেলের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি নিজের জমি ও বাড়ি তাকে লিখে দেন। কথা ছিল, বজলুর রহমান ও তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুনের আজীবন ভরণপোষণ দেবেন আব্দুস সালাম বাবু।

কিন্তু বজলুর রহমানের অভিযোগ, কয়েক মাস আগে বাবু তাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। অসহায় অবস্থায় তিনি একটি বাড়িতে ভাড়া থেকে ভিক্ষা করছিলেন। এ ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ায় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু তাকে তার বাড়িতে তুলে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির গত ৫ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা তুজ জোহরা এবং সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হুসেনের মাধ্যমে বৃদ্ধ বজলুর রহমানকে তার বাড়িতে তুলে দিয়ে আসেন।

এসময় অভিযুক্ত ছোট ছেলে বাবু তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে বাবাকে নিজের কাছে আজীবন রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।

এদিকে বজলুর রহমান ছোট ছেলের নামে দেওয়া জমি ও বাড়ি ফিরে পাওয়ার জন্য আদালতে একটি মামলা করেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নিজ বাড়িতে তিনি একটি নোটিশ ঝুলিয়ে দেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ছোট ছেলে বাবু।

তিনি নোটিশটি ছিঁড়ে ফেলে দেন এবং বাবাকে মারধর করে আহত করে বাড়ি থেকে আবার বের করে দেন। এসময় বাবার মোবাইল ফোন, ওষুধপত্র এবং ব্যবহার্য সব কিছুই বাড়িতে আটকে রাখেন তিনি। এরপরই বজলুর রহমান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আব্দুল হান্নানের সহায়তায় হাসপাতালে ভর্তি হন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুস সালাম বাবু বলেন, একই বাড়িতে বাদী ও বিবাদী থাকা সম্ভব নয়।  

কারো কোনো অঘটন ঘটলে তার দায়িত্ব কে নেবে এ প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এ কারণেই আমি তাকে বলেছি, আপনি বাড়ি থেকে চলে যান। তবে মারধর করিনি। তার মোবাইল ও ওষুধপত্র আমার ঘরেই আছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২১
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad