ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গলায় আগের মত সুর ওঠে না, গানের কথাও মনে পড়ে না

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
গলায় আগের মত সুর ওঠে না, গানের কথাও মনে পড়ে না কবিয়াল হাসেম আলী

মাগুরা: বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে। গলায় আর আগের মত সুর ওঠে না।

গানের কথাও মনে পড়ে না। বলছি মাগুরা শালিখা উপজেলা কাতলী গ্রামের কবিয়াল হাসেম আলীর কথা। এক সময় জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে গান গেয়ে দর্শকদের মন জয় করেছেন তিনি।

কবিয়াল হাসেম আলী মাগুরা জেলা কাতলী গ্রামে ১৭ মার্চ ১৯২৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। হাসেম আলীর বাবার নাম জিনাতুল্লাহ মোল্ল্যা। মায়ের নাম ওয়াজেদা খাতুন। বাবা মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে হাসেম আলী সবার বড়। তিনি ১৩৬৫ (বাংলা) সালে শতখালী গ্রামের মান্দার শিকদারের মেয়ে রহিমা বিবি এবং স্বাধীনতা পর কাতলী গ্রামের হুরমত মোল্ল্যার মেয়ে রিজিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন। ৬ ছেলে ৫ মেয়ের পিতা তিনি।

হাসেম আলীর জীবন কেটেছে কষ্টে। বড় সন্তান হিসেবে হাসেম আলীর ওপর দায়িত্ব পড়ে সংসারের। দিনমজুর হিসেবে যা পেতেন তা দিয়েই কোনো মতে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ওই সময় তিনি মুখে মুখে গান রচনা শুরু করেন। আশপাশের মানুষকে গেয়ে শোনাতেন। এরপর থেকে তার গান ধীরে ধীরে লোক মুখে প্রচার হতে থাকে। বাম হাতে প্রেমজুড়ি বাজিয়ে হাটবাজারে গান গেয়ে মুগ্ধ করতেন মানুষকে।

তিনি প্রায় চারশ গান রচনা করেছেন। পাঁচটি কবিতার (সায়ের) বই প্রকাশ করেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতের পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে অসংখ্য গান গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধা, শরণার্থীদের মন জয় করেছিলেন তিনি।

কাতলী গ্রামের বাসিন্দা সৈকত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, হাসেম আলী আমাদের কাতলী গ্রামের গর্ব। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে সরকারিভাবে কবিয়াল হাসেম আলীর মূল্যায়ন করা উচিত।

মাগুরা জেলা কালচারাল অফিসার অনুপ চ্যার্টাজি বাংলানিউজকে বলেন, জেলা শিল্পকলায় কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, লেখক, গীতিকার, সুরকার, নাট্যকার, অভিনয় শিল্পী, বাদ্যযন্ত্র শিল্পীদের নামের তালিকা রয়েছে। কবিয়াল হাসেম আলীর খোঁজ খবর নিয়ে তাকে সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬,২০২১
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।