ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দালাল কম তাই মিরপুর বিআরটিএর সেবায় স্বস্তি

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
দালাল কম তাই মিরপুর বিআরটিএর সেবায় স্বস্তি

ঢাকা: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মিরপুরস্থ ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ে দালালদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমেছে। আর এতে এখানকার সেবা নিয়ে স্বস্তিতে আছেন সাধারণ নাগরিকরা।

সেবা প্রত্যাশীরা বলছেন, চাপ থাকায় ‘সিরিয়াল’ দিতে হলেও দালালদের অনুপস্থিতিতে হয়রানি ছাড়াই সেবা পাচ্ছেন তারা।

গেল ৫ সেপ্টেম্বর সারাদেশে বিআরটিএসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও পাসপোর্ট অফিসে দালাল ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালায় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব। এই অভিযানের পর বিআরটিএসহ বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়গুলোতে দালালদের দৌরাত্ম্য অনেকাংশে কমেছে।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর মিরপুরের বিআরটিএ কার্যালয়ে সরেজমিন অবস্থান করেও দালালদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি। যানবাহনের নতুন রেজিস্ট্রেশন, মালিকানা বদলি এবং ফিটনেস শাখার চেকিংয়ের স্থানগুলোতে গিয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম দেখা যায়। ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং স্বাক্ষর প্রদান শাখা এবং মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নম্বর প্লেট সংযোজন এলাকায়ও ছিল একই রকম চিত্র। তবে এই দুই শাখায় সেবা প্রত্যাশীদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

ভিড় কিছুটা হলেও আর তুলনামূলক বেশি সময় অপেক্ষা করতে হলেও এভাবেই সেবা নিতে চান এখানে আসা সাধারণ নাগরিকরা। গাড়ির ফিটনেস নবায়ন করতে আসা একটি প্রাইভেটকারের মালিক মামুনুর রশীদ নিজ অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, আমার আজকে ফিটনেস নবায়নের তারিখ ছিল। গতকালই অনলাইনে এপয়েন্টমেন্ট নির্ধারণ করি আজ সকাল ১০টার। ১০টার সময়ে এখানে এসে আমার আগে আরও দুইটা গাড়ি পাই। তাদেরটার পরেই আমারটা দেখিয়েছি। সব কাগজপত্র দেখে ফিটনেস আগামী দুই বছরের জন্য নবায়ন করে দিয়েছে। অন্য সময় দালাল থাকলে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়েও গাড়ি দেখানো যেতো না। দালালদের মাধ্যমে না আসলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো।

মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নম্বর প্লেট সংযোজন করতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বলেন, অনেক সময়ই আমাদের কাগজপত্র ঠিক থাকলেও নানা খুঁত বের করেন এখানকার লোকেরা। এর কারণ হচ্ছে আমরা যেন তখন দালাল ধরি বা ভিন্ন কোনো উপায় খুঁজি। কিন্তু এখন এখানে দালালই নেই। তাই তাদের খুঁত ধরেও লাভ নাই। সে কারণেই সহজেই আমাদের কাজটা হয়ে যাচ্ছে। তবে সিরিয়াল ধরতে হচ্ছে। আমি প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে সিরিয়ালে আছি। তাও ভালো যে আমার কিছুটা সময় গেলেও দালালদের বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে না।

এই বিভাগে দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, ডিজিটাল নম্বর প্লেটের ‘লট’ এলে সংযোজনের জন্য অনেককে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হয়। দিনে ৭০০-৮০০ জনের মোটরবাইকে ডিজিটাল নম্বর প্লেট সংযোজন করা হয়। ফলে তখন বেশ চাপ থাকে।

একটি বেসরকারি তৃতীয় পক্ষের হয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক সদস্য পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, এখানে স্যারদের সঙ্গে দালালদের একটা সিন্ডিকেট আছে। তবে কিছুদিন আগে র‍্যাবের অভিযান হওয়াতে সবাই এখন সতর্ক। কেউ রিস্ক (ঝুঁকি) নিতে চাচ্ছেন না। সে কারণে এখন দালাল নেই। আগে যেসব দালাল কাজ নিয়ে রাখছিল তারা সেই কাজগুলো নিয়ে কিছু কিছু জায়গায় যায়। তবে নতুন করে পার্টি ধরতে এখন বেশ সতর্ক তারা। আবার অনেক সময়ে মানুষজন নিজেরাই দালাল খোঁজেন কারণ হয় কাগজ ঠিক থাকে না, আর নয়তো নিজের কাজ নিজে করতে চায় না বা সিরিয়াল ধরতে চায় না।

দালালবিহীন বিআরটিএ কতদিন থাকে সেটিই এখন দেখার বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
এসএইচএস/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।