ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

করোনায় মৃতদের দাফন-সৎকার করায় ৭৬ জনকে পুরস্কৃত 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২১
করোনায় মৃতদের দাফন-সৎকার করায় ৭৬ জনকে পুরস্কৃত  প্রনোদণার টাকা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির মরদেহ দাফন ও সৎকার কাজে নিয়োজিত কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন রাজশাহীর ৭৬ জন স্বেচ্ছাসেবীকে পুরস্কৃত করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে নগর ভবনের সিটি হল রুমে স্বেচ্ছাসেবীদের হাতে প্রণোদনার টাকা তুলে দেন সিটি মেয়র।

তিনি ৭৬ জন স্বেচ্ছাসেবীর প্রত্যেকজনকে নগদ ১০ হাজার করে টাকা দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, করোনায় মৃত ব্যক্তিদের মরদেহ দাফন-সৎকারে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তা আমাদের সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। করোনায় মৃত ব্যক্তির মরদেহ যখন তার পরিবার ও স্বজনরা ফেলে চলে গেছে, তখন সযত্নে নিজের পরিবারের সদস্য মনে করে সেই মরদেহ পরম মমতায় ধর্মীয় অনুশাসন মেনে দাফন করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।

নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মৃত্যু ভয়কে জয় করে মানবিক ও মহৎ কাজটি করে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। আমি বিশ্বাস করি এই কাজের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে তারা পুরস্কৃত হবেন। মহতি এই কাজে অতীতেও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পাশে ছিলাম, আগামীতেও থাকবো। দেশের যে কোনো সংকটময় মুহূর্তে আগামীতেও নাগরিকদের পাশে থাকবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এই প্রত্যাশা করি।

অনুষ্ঠানে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূক্তি ব্যক্ত করেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আহিদ উল হক ও গৃহীনি মোনালিসা জলি।  

আহিদ উল হক বলেন, আমি প্রায় ৯৫টি মরদেহ দাফনে অংশ নিয়েছি। আমার পরিবারের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় কাজটি করা সম্ভব হয়েছে।

মোনালিসা জলি বলেন, প্রথম অবস্থায় নারীদের মরদেহ দাফনে কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি জানতে পেরে আমি মরদেহ দাফনের কাজে নিয়োজিত হই। একেকটা মরদেহ দাফন মানে একেকটা গল্প, দুলর্ভ অভিজ্ঞতা। হাসপাতালের মর্গে একজন নারীর মরদেহ রাখা হয়েছিল, তাকে শেষবারের মতো দেখার কেউ ছিল না। তবে মরদেহের হাতে থাকা একটি আংটি নিতে এসেছিলেন মৃতের এক স্বজন। করোনায় আক্রান্ত স্বামীর সেবা করতে গিয়ে মারা গেছেন স্ত্রী, এমন মরদেহ দাফনের অভিজ্ঞতা হয়েছে। দুই ধরনের চিত্রই আমরা দেখেছি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ও বারিন্দ মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মঞ্জুরুল হক এবং উপদেষ্টা রাবির প্রফেসর ড. শহিদুল আলম। তারা বলেন, করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে যখন করোনায় মৃত ব্যক্তিকে দাফনে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন এগিয়ে আসেনি, সেই সময়েও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীরা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মরদেহ দাফন করেছে।

এ কাজে শুরু থেকেই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন মহোদয় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন, এজন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ। মহতি কাজে উৎসাহ প্রদানে প্রণোদনা দেওয়ায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও রাসিক মেয়রের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, সচিব মো. মশিউর রহমান, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন রাজশাহীর পরিচালক মো. কায়সার পারভেজ।

বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২১
এসএস/আরএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।