ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে যাত্রীদের যাত্রা চলছেই

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২১
ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে যাত্রীদের যাত্রা চলছেই ফেরিতে যাত্রীর ভিড়। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ যাত্রীদের পারাপারের বিধিনিষেধ থাকা সত্বেও নানা অযুহাতে ফেরিতে পারাপার হচ্ছে মানুষ।  

শুক্রবার (২৫ জুন) সকাল থেকে শিবচরে বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।

তবে ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রীদের চাপ গত দুদিন তুলনায় আজ কিছুটা কমেছে।

করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মাদারীপুরে চলছে লকডাউন। গত মঙ্গলবার ভোট ৬টা থেকে লকডাউন শুরু হলে গণপরিবহনের পাশাপাশি বন্ধ রাখা হয় বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটের লঞ্চ চলাচল। শুধু জরুরি যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। তবে জরুরি যানবাহনের পরিবর্তে ফেরি যেন শুধু যাত্রী পারাপারের নৌযানে পরিণত হয়েছে।  

ফেরিতে যাত্রীদের বসার স্থান পরিপূর্ণ হওয়ার পরও গাড়ি রাখার খোলা স্থান যাত্রীতে পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ফেরিই ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে না। ফলে ফেরিতে গাদাগাদি করে পার হচ্ছে যাত্রীরা। করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউন যেন ফেরিঘাটে প্রহসনে পরিণত হয়েছে। এমন মন্তব্য স্থানীয়দের।

শুক্রবার সকালে বাংলাবাজার ঘাট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাবাজার ঘাট এলাকা করোনায় সংক্রমিত হওয়ার প্রবল ঝুঁকিতে রয়েছে বলে আমরা শঙ্কা করছি। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই ঘাট দিয়ে রাজধানী ঢাকায় যাওয়া-আসা করছে। দক্ষিণাঞ্চলের করোনা সংক্রমিত ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলো থেকে প্রতিদিনই মানুষ অনায়াসে বাংলাবাজার ঘাট দিয়ে ঢাকা যাচ্ছে। লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে যাত্রী পারাপার বন্ধ রাখতে। কিন্তু ফেরিতে তো যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকছেই। লকডাউনের মধ্যেও যদি অবাধে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করতে পারে তবে লকডাউন কোনো সুফল বয়ে আনবে না। যাত্রীদের অবাধ যাতায়াতের কারণে ঘাট সংলগ্ন এলাকার মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ'র বাংলাবাজার লঞ্চঘাট সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ভোর থেকেই সরকারি নির্দেশনা মতে নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। লকডাউনে এর আগেই অনেকদিন পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। নৌরুটে ৮৭টি ছোট-বড় লঞ্চ রয়েছে। স্বাচ্ছ্যন্দে পদ্মা পারাপারে যাত্রীদের পছন্দের বাহন হচ্ছে লঞ্চ।

বিআইডব্লিউটিসি'র বাংলাবাজার ফেরিঘাট সূত্রে জানা গেছে, নৌরুটে জরুরি যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যানবাহনের পাশাপাশি ফেরিতে যাত্রীরা পারাপার হচ্ছে। লঞ্চ বন্ধ থাকায় ফেরিঘাটে যাত্রীদের বাড়তি ভিড় তৈরি হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি'র বাংলাবাজার ফেরিঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. জামিল হোসেন জানান, জরুরি পরিবহন পারাপারের জন্য ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যাত্রীরা ঘাটে চলে এলে তাদের থামানো যায় না। যানবাহনের সঙ্গে যাত্রীরাও পার হচ্ছে। শুক্রবার যাত্রীদের চাপ কিছুটা কমেছে।

কাঁঠালবাড়ী ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মো. জামালউদ্দিন জানান, যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় থ্রি হুইলারে করে বিভিন্ন উপায়ে যাত্রীরা ঘাটে চলে আসছে। আমরা যাত্রীদের নিরুৎসাহিত করছি। তাছাড়া ঘাটে যাতে থ্রি হুইলার প্রবেশ করতে না পারে সেজন্যও পুলিশ কাজ করছে। গত দুইদিনের তুলনায় ঘাটে শুক্রবার যাত্রীর চাপ কমেছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যাত্রীরা যাতে থ্রি হুইলারসহ অন্যান্য যানবাহনে করে ঘাটে পৌঁছাতে না পারে সেজন্য মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশ রয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অন্য সব গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে। ফেরিতে যাত্রীদের পারাপার ঠেকাতে পুলিশ ও ফেরি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।