ঢাকা: চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের রাজাকার আব্দুল হান্নানের ছয় সন্তানের একজন আবুল হাসনাত। ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে নিজের নাম পাল্টে আবুল হাসনাত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিতি পেয়েছেন হাবিব খান নামে। মিরসরাই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে জড়িয়ে সেজেছেন মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক।
মিরসরাইয়ের ১৩ নম্বর মায়ানী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মো. আমিনুজ্জামান এক চিঠিতে উল্লেখ করেন, মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে আব্দুল হান্নান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত রাজাকার। আব্দুল হান্নানের পরিবারের একাধিক সদস্য মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল। যুদ্ধের সময় হান্নান পাক হানাদার বাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর-বাড়ি চিনিয়ে দিতো। পরে তার দেখানো ঘর-বাড়ি পাকবাহিনী আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতো। স্বাধীনতার পর হান্নান রাজাকার ১০-১২ বছর পলাতক ছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, ১৩ নম্বর মায়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির নিজামী, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন সহ স্থানীয় প্রবীণরা।
সেই স্বাধীনতাবিরোধী হান্নান রাজাকারের ছেলে আবুল হাসনাত প্রকাশ হাবিব খান মুজিব কোট গায়ে জড়িয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়ানোয় ক্ষুব্ধ সবাই।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান বলেন, আব্দুল হান্নান রাজাকার ছিল- এটা সবাই জানে। সার্ভেয়ার কাজল নামে আব্দুল হান্নানের এক ভাতিজাও পাকবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ছিল। সেই পরিবারের সন্তান আবুল হাসনাত এখন হাবিব খান নামে আওয়ামীলীগ করছে।
জানা গেছে, রাজাকার আব্দুল হান্নানের ৫ মেয়ে ও ১ ছেলে আবুল হাসনাত। তিনি নিজেকে আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিলেও স্থানীয় নেতা-কর্মীরা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে পারছেন না। হাবিব খান নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পুত্র মাহবুবুর রহমান রুহেলের পিএস হিসেবে পরিচয় দিয়ে বেড়ান।
আবুল হাসনাত প্রকাশ হাবিব খান বলেন, ‘এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। আমার বাবা রাজাকার ছিলেন, এমন তথ্য প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না’।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২১
এসএল