ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

করোনার কঠিন সময়ে প্রয়োজন জোরালো বৈশ্বিক সহযোগিতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৪ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২১
করোনার কঠিন সময়ে  প্রয়োজন জোরালো বৈশ্বিক সহযোগিতা

ঢাকা: করোনা মহামারির কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে জোরালো বৈশ্বিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে কোভিড-১৯ মহামারির বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে জরুরি ভিত্তিতে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার (২২ জুন) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় তিন দিনব্যাপী কাতার ইকোনোমিক ফোরামের সম্মেলনে (ভার্চ্যুয়াল) পূর্ব রেকর্ডকৃত ভিডিও বার্তায় এ আহ্বান জানান। কাতার ইকোনোমিক ফোরামের থিম হলো—‘রি-ইমাজিনিং দ্য ওয়ার্ল্ড’।

বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারিতে ইতোমধ্যে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। এ মহামারির ধাক্কায় বিশ্ব বহু দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে। এই কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে আমাদের জোরালো বৈশ্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জগুলো প্রত্যক্ষ করছি। সবার সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর প্রভাব প্রশমনে সবাই এক হয়ে জরুরি ভিত্তিতে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

কোভিড-১৯ মহামারিকে বৈশ্বিক সংহতির জন্য একটি ‘লিটমাস টেস্ট’ হিসেবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্যারিস চুক্তি এবং আদ্দিস আবাবা অ্যাকশন অ্যাজেন্ডা এই সংকট থেকে উত্তরণে আমাদের জন্য ব্লু -প্রিন্ট হতে পারে।

নিজের দৃঢ় বিশ্বাসের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বৈশ্বিক পাবলিক পণ্য হিসেবে ঘোষণা হওয়া উচিত। উন্নয়নশীল এবং এলডিসি অনেক দেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমরা বিশ্বজুড়ে জনবহুলতা, বিশ্ব-বিরোধী সংবেদনশীল মনোভাব এবং অর্থনৈতিক সুরক্ষাবাদের উত্থান দেখছি। বহুপাক্ষিকতাকে শক্তিশালী করতে আমাদের একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে। অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্প্রসারণের পূর্ব শর্ত হিসেবে বিশ্বের সবখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ৬ পরামর্শ উপস্থাপন করেন।

এগুলো হলো—
১. প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অর্জনে উচ্চভিলাষী জলবায়ু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
২. ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনকে এগিয়ে নিতে হবে।
৩. বৈশ্বিক বাণিজ্য এবং রফতানি আয় পুনরুজ্জীবিত করতে লক্ষ্য ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন।
৪. ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী শ্রমিকদের পুনরায় সুসংহত করতে এ অঞ্চলের আয়োজক দেশ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং বিনিয়োগকারীদের অবদান রাখা উচিত।
৫. মহামারির কারণে এলডিসি থেকে উত্তরণ হওয়া দেশগুলোর সম্ভাব্য ‘স্লাইড ব্যাক’ ঠেকাতে নতুন আন্তর্জাতিক সহায়তার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
৬. সমৃদ্ধির জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং সামগ্রিক একটি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা প্রয়োজন। মহামারির পরেও টেকসই এবং সমতাভিত্তিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

গত এক দশকে বাংলাদেশ ৬ শতাংশের বেশি টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এলডিসি থেকে উত্তোরণের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছি কোভিড-১৯ মহামারির সঙ্গে লড়াই করার সময়। আমরা জীবন ও জীবিকার মধ্যে একটি ভারসাম্য তৈরি করার চেষ্টা করছি। আমাদের সরকার এ পর্যন্ত ১৫.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণের বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। মহামারি সত্ত্বেও, আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২০-২০১২ সালে ৬.১ শতাংশে পৌঁছেছে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ রয়েছে এবং দেশটি বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে। কাতার এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিশেষত অবকাঠামো, আইসিটি, নবায়নযোগ্য শক্তি, হালকা প্রকৌশল ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প এবং পাট ও কৃষিজাত পণ্যের ক্ষেত্রে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২১
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।