ঢাকা: বিগত দশ পনের দিন ধরে রাজধানীর ট্রাফিক উত্তর বিভাগের বিশ্বরোড, এয়ারপোর্টে, উত্তরা ও আব্দুল্লাহপুরে তীব্র যানজট লেগেই থাকছে। বিশ্বরোড থেকে টঙ্গীব্রিজ পার হতে সর্বনিম্ন সময় লাগছে চার ঘণ্টার মতো।
এয়ারপোর্ট থেকে বিআরটিয়ের আট লেনের উড়াল সেতুর কাজের জন্য বহুদিন ধরে এই এলাকায় যানজট লেগেই থাকতো। তবে এ বছরে বৃষ্টির শুরু থেকে সড়কে পানি জমে বড় বড় খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়।
এয়ারপোর্ট, আব্দুল্লাহপুর, সেনাকল্যাণ ভবন, পাখির হাট মোড়, স্টেশন রোড, বাটার সামনে বাস্তহারা ও মুন্নুগেট পর্যন্ত সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে গাড়ি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এই সড়কে চলাচলকারী পিকাপ ড্রাইভার আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি বিশ্বরোড় থেকে চার ঘণ্টায় আসতে পেরেছি মাত্র ৪/৫ কিলো। টাঙ্গাইলে কখন পৌঁছাতে পারবো আল্লাহ ভালো জানেন।
উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের ডিসি মো. সাইফুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বহুদিন ধরে বিআরটি উন্নয়নের কাজ চলছে, পাশাপাশি রাস্তার অবস্থা বেশি ভালো না, একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যাচ্ছে। এজন্য যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
গাজীপুর ট্রাফিকের (জিএমপি) ডিসি আব্দুল্লাহ আল-মামুন বাংলানিউজকে বলেন, বিগত কয়েক দিন ধরে উত্তরা এলাকায় দু’টি কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রথমত আশুলিয়া, জিরাবো, ছালেপুর নামের একটি ব্রিজের কাজ চলছে। এজন্য আশুলিয়ার জেলা পুলিশ একদিক বন্ধ রেখে এক দিক গাড়ি চালাচ্ছেন। একারণে জ্যাম চলে আসছে তুরাগের বেড়িবাঁধ ধরে আশুলিয়া পর্যন্ত। মধ্যরাতের পর থেকে উত্তরবঙ্গের কোনো গাড়ি যেতে পারে না। চেরাগ আলী, টঙ্গী ও আব্দুল্লাপুর হয়ে ঢাকার দিকে চলে যাচ্ছে। রোডের জ্যামের আরও একটি কারণ রয়েছে রাস্তায় কাজ চলছে রাস্তা ভাঙা। মাত্র ৫/১০ স্পিডে গাড়ি চলছে।
মো. সালাত হাসান প্রাইভেটকারযোগে প্রতিদিন গাজীপুর থেকে তেজগাঁও অফিস করেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তার কোনো উন্নয়নের কাজ নেই। এজন্য রাস্তার বেহাল দশা, তেজগাঁও থেকে গাজীপুর মাত্র ৪০-৪৫ মিনিটের রাস্তা অথচ মাঝেমধ্যে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লেগে যায়। প্রতিদিনই অনেক গাড়ি নষ্ট হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
উত্তরা জোনের ট্রাফিকের ডিসি মো. সাইফুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার রাস্তা। এই রাস্তায় বিআরটিয়ের কাজ চলছে। আর কাজ চলতে থাকলে প্রতিবন্ধকতা হয়। তারপর এই রাস্তার কার্পেটিং নেই তাই বৃষ্টি-বাদল হলেই খানা-খন্দে ভরে যায়। তাছাড়া এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী বেশিরভাগ ভারী যানবাহন। একারণে খানা-খন্দের পরিমাণ আরও বেড়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যানজট থেকে জনগণকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ট্রাফিকের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার চেষ্টার কমতি নেই। ট্রাফিকের প্রত্যেকটা সদস্য আমরা দিন-রাত রাস্তায় থেকে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি।
এদিকে যানজটের কারণে প্রতিদিন অনেক বিদেশগামী যাত্রী সময়মতো এয়ারপোর্টে পৌঁছাতে পারছেন না। তাদের বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২১
জিএমএম/এমআরএ