ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যৌতুকের মামলা করায় প্রাণনাশের হুমকি, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২১
যৌতুকের মামলা করায় প্রাণনাশের হুমকি, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন সংবাদ সম্মেলন

নীলফামারী: আমেরিকা প্রবাসী প্রকৌশলী স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করায় গৃহবধূকে মামলা তুলে নিতে চাপ ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।  

শুক্রবার রাতে (২৮ মে) শহরের বাঁশবাড়ি বাবার বাড়িতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন গৃহবধূ ও তার পরিবার।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নির্যাতিত গৃহবধূ নাভানা শারমিনের (অনন্যা) বাবা ব্যবসায়ী এজাজুল ইসলাম বাচ্চু।  
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমেরিকা প্রবাসী প্রকৌশলী নাশীঈদ আরেফুল হক (৩০) বিগত ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিয়ে করেন সৈয়দপুর শহরের বাঁশবাড়ি মহল্লার ব্যবসায়ী এজাজুল ইসলাম বাচ্চুর ছোট্ট মেয়ে নাভানা শারিমনকে (অনন্যা)। এর আগে ওই প্রকৌশলী দুটি বিয়ে করলেও তা গোপন করেন। বিয়ের পর কিছুদিন সম্পর্ক স্বাভাবিক ছিল। এরপর যৌতুকের দাবিতে কারণে-অকারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে যান ওই প্রকৌশলী। একপর্যায়ে তিনি স্ত্রীকে রেখে আমেরিকা পাড়ি জমান।  

নাভানা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শ্বশুরবাড়িতে সংসার করতে থাকেন। পরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দেশে আসেন আরেফুল এবং নাভানাকে জানান, আমেরিকায় ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরির জন্য ৭৫ লাখ টাকা প্রয়োজন তার। ওই টাকা না দিলে তাকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দেন। ওই টাকা নাভানা বাবার বাড়ি থেকে আনতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। এর পর স্ত্রীকে রেখে আবারও আমেরিকা চলে গেলে ছেলের উস্কানিতে শ্বশুর-শাশুড়ি নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। পরে তিনি বাবার বাড়ি চলে আসেন।  

রোজার মধ্যে আরেফুল আমেরিকা থেকে মোবাইল ফোনে জানান, ঈদ করতে দেশে আসছেন তিনি। গত ৫ মে তার শ্বশুর ও শাশুড়ি নিজে এসে বাবার বাড়ি থেকে নাভানাকে শ্বশুরবাড়ি মুন্সিপাড়ায় নিয়ে যান। কিন্তু আরেফুল আর দেশে ফিরেনি। আরেফুলের বাবা-মা যৌতুকের দাবি জোরালো করেন। গত ১০ মে ২৭ রমজান, রোজা ছিলেন নাভানা। ইফতারের পর শ্বশুর সাংবাদিক আমিনুল হক, শাশুড়ি উপাধ্যক্ষ নার্জিজ বানু ও আত্মীয় নূরুন্নবী ওরফে দুখু মিয়া মিলে বেধড়ক লাঠিপেটা করেন নাভানাকে। এতে গুরুতর আহত হয় নাভানা। তার চিৎকারে প্রতিবেশী সামিউল ইসলাম তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। কিন্তু তাকে অপমান করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। নাভানার বাবা-মাকে মোবাইল ফোনে খবর দেওয়া হলে তারা এসে তাকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় গত ১৬ মে নাভানা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।  

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাভানা কেঁদে কেঁদে বলেন, আমি নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। বাধ্য হয়ে শ্বশরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি প্রতারণাকারীদের মুখোশ উন্মোচন করতে চাই, চাই সুষ্ঠু বিচার।

এ প্রসঙ্গে নাভানার শ্বশুর আমিনুল হক বলেন, যে অভিযোগ করা হয়েছে তা অদৌ সত্য নয়। আদালতে মামলা মোকাবিলা করা হবে। তিনি বলেন, যে মামলা করেছে সে আমার স্নেহধন্য। তাই মনোকষ্ট পেয়েছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad