ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বগুড়ায় শেষ মুহূর্তে বিপণিবিতানে ক্রেতাদের ভিড়

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৭ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২১
বগুড়ায় শেষ মুহূর্তে বিপণিবিতানে ক্রেতাদের ভিড় নতুন পোশাক দেখছেন ক্রেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: ঈদুল ফিতর সন্নিকটে। এর মধ্যেই কেনাকাটা সম্পন্ন করতে হবে।

পছন্দের পোশাক কিনতে তাই সবাইকে ছুটতে হচ্ছে একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। তবে, ভিড় বেশি শহরের নিউমার্কেটে। আধুনিক শপিংমল ও ফ্যাশন হাউসগুলোতেও ভিড় বাড়ছে। ক্রেতা-বিক্রেতা কারো যেন দম ফেলার ফুসরত নেই।

বুধবার (১২ মে) বগুড়া শহরের নিউমার্কেটসহ অভিজাত বিপণিবিতানগুলো ঘুরে ঈদের কেনাকাটার এমন দৃশ্য দেখা যায়।   হাতে সময় নেই। এর মধ্যেই ঈদের কেনাকাটা সম্পন্ন করতে হবে। তাই এ মুহূর্তে দাম নিয়ে অতটা শক্ত মনোভাব দেখাচ্ছেন না বিক্রেতারা। বাড়তি সময় না থাকায় ক্রেতাও দামদরের চেয়ে পছন্দকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বেশি। কোনো পোশাক পছন্দ হলেই আর দেরি নয়। দাম নিয়ে কোনো পক্ষই শেষ মুহূর্তে এসে অতটা দর কষাকষি করছেন না বলেই চলে। ঈদকে সামনে রেখে ফুটপাতের দোকানগুলোতে এখন একদাম। এখানে দামদরের কোনো সুযোগ নেই। পছন্দ করতে পারলেই অত্যন্ত সহজে স্বল্প দামেই ক্রেতা পোশাক কিনতে পারছেন। ফুটপাতের এসব দোকানগুলোয় নিম্ন, মধ্য ও উচ্চবিত্ত পরিবারের নারী-পুরুষদের পোশাক কিনতে দেখা যায়।

বর্তমানে মার্কেটের বেশির ভাগ দোকান ও অভিজাত বিপণিবিতানে একদরে জিনিস বিক্রি করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানেও দাম নিয়ে তেমন একটা সমস্যা হয় না। তবে, অনেক ক্রেতাকেই পছন্দের পোশাক কিনতে বাজেট নিয়ে সমস্যায় পড়তে দেখা যায়।

এদিকে শহরের অভিজাত এলাকাখ্যাত জলেশ্বরীতলার বিপণিবিতানগুলোয় উপচেপড়ে ভিড় দেখা যায়। তবে, দোকানগুলোয় পুরুষদের তুলনায় নারী ক্রেতার উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। এবার তরুণীদের ক্রেজ হলো গাররা, গাউন, সাররা ড্রেস। উঠতি বয়সী তরুণী থেকে মধ্য বয়সের নারীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে আধুনিকমানের এই পোশাকগুলোর স্থান। এই পোশাকগুলো সর্বনিম্ন ৩ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে দোকানিরা জানান। বর্তমানে হাতে সময় কম থাকায় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় রেডিমেড পোশাকের দোকানগুলোয়।

দোকানি সাজেদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর রোজার শুরু থেকেই কমবেশি অনেকেই ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু এবারে ঘটেছে তার ব্যতিক্রম। গেল বছরের মতো এবারও করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে রমজানের শুরুতে মার্কেট বন্ধ থাকায় ব্যবসা হয়নি। তবে, ঈদ সন্নিকটে আসায় বর্তমানে বিকিকিনি ভালই হচ্ছে। তিনি জানান, মূলত ১৫ রমজানের পর থেকেই ব্যপকভাবে মার্কেটমুখী হতে শুরু করেন ক্রেতা সাধারণ। ক্রেতাদের রুচিকে প্রাধান্য দিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পোশাকের আমদানি ঘটিয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এবারের ঈদের কেনাকাটায় নারীদের পছন্দের শীর্ষে ছিলো বিভিন্ন দেশের আকর্ষণীয় থ্রি-পিস।

শহরের নিউ মার্কেট, জলেশ্বরীতলার বিভিন্ন অভিজাত বিপণিবিতান, রেলওয়ে হকার্স মার্কেট, রেললাইন ও ফুটপাতের দোকানগুলোয় এখন শুধুই ক্রেতা সাধারণের ভিড়। গার্মেন্টস, কসমেটিকস, শাড়ি, জুতার দোকানগুলোতে ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। শেষ বেলায় এসে সবাইকে পছন্দ ও সাধ্যানুযায়ী নানা ধরনের পণ্য কিনতে দেখা যায়।

এখন সিংহভাগ টেইলার্স থেকে তৈরিকৃত কোর্ট, শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, টাউজার ইতোমধ্যেই ডেলিভারি নিয়েছেন ক্রেতারা। এখনো তৈরিকৃত বাকি পোশাক আজ ও চাঁদরাতে ডেলিভারি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ক্রেতা ইকবাল হোসেন টমি, শাহানুর রহমন বাংলানিউজকে জানান, ঈদ ঘনিয়ে এসছে। সময় হাতে নেই বললেই চলে। এখন কাপড় কিনে পোশাক বানিয়ে নেওয়ার মতো সময় হাতে নেই। তাই রেডিমেড প্যান্ট, শার্ট ও পাঞ্জাবি কেনাকাটা করছেন। ইতোমধ্যেই পছন্দের প্যান্ট ও শার্ট কিনেছেন। এখন পাঞ্জাবি কেনা হলেই কেনাকাটার পর্বটা শেষ হবে।

ক্রেতা সানজিদা তানিয়া, ইশিতা ঈশা বাংলানিউজকে জানান, শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় পোশাকের বিভিন্ন শো-রুমে ঘুরে ঘুরে পছন্দ অনুযায়ি কেনাকাটা করছেন তারা। তারা দু’জনই গাউন ও সাররা ড্রেস কিনেছেন। এখন লেডিস ব্যাগ ও পছন্দ মতো হিল জুতো কিনবেন।

একাধিক দোকানি জানান, ক্রেতার হাতে সময় নেই বললেই বলে। তাই তৈরিকৃত পোশাক কেনা ছাড়া এ মুহুর্তে কোনো উপায় নেই। এক্ষেত্রে গার্মেন্টেসের তৈরি পোশাক ছাড়া আপতত তাদের সামনে কোনো পথ নেই। তাই রেডিমেড পোশাকের দোকানগুলোয় শেষ মুহূর্তে এসে জমে ইঠেছে বেচা-বিক্রি। আর মেয়েদের পছন্দে বাদ যায়নি বাহারি ডিজাইনের শাড়ি এবং ছেলেদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্ট। পাশাপাশি দেশীয় কাপড়ের কদরও একেবারে কমে যায়নি বলেও মন্তব্য করেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।