বগুড়া: বগুড়ার মেয়ে মৌসুমি আক্তার এপি পেশায় একজন স্কুলশিক্ষক। থাকেন ঢাকায়।
একজন নারী হয়ে এত বড় একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করায় অবাক এলাকাবাসী। তবে এমন সাহসিকতাকে স্বাগত জানিয়েছেন তার সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের লোকজন ও স্বজনরা।
জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের রথবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম তালুকদারের মেয়ে এপি। থাকেন ঢাকার গোলাপবাগে। সেখানে বনানীর ‘চিটাগাং গ্রামার স্কুল ঢাকা’ নামে একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যে পবিত্র ঈদুল ফিতরে ছুটি পেয়ে বাড়ি ফেরা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি। ‘লকডাউন’র কারণে ট্রেন ও দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় এবং করোনা সংক্রমণের উর্ধ্বগতির কারণে গণপরিবহন এড়িয়ে বাইসাইকেলে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।
যেমন সিদ্ধান্ত তেমনি কাজ। সোমবার (১০ মে) বিকেল ৪টার দিকে ঢাকার গোলাপবাগ থেকে বাইসাইকেলে করে তিনি বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। এরপর জাহাঙ্গীর নগরে তার সঙ্গে যোগ দেন সিরাজগঞ্জের মীর রাসেল নামে অনার্সের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী। সেখান থেকে তারা দু’জনে একটানা বাইসাইকেল চালিয়ে রাসেলের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ভূঁইয়াগাতি এলাকায় পৌঁছান। রাসেল রাড়ি ফিরলে এপি সেখানে একা হয়ে যান। এবার তিনি একাই টানা বাইসাইকেল চালিয়ে পৌঁছেন বগুড়ায়।
বগুড়ায় এসে যাত্রাবিরতির পর তার বান্ধবী মালার বাসায় সেহরি শেষে মঙ্গলবার (১১ মে) সকাল ৬টার দিকে তিনি সান্তাহারের উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে যাত্রা কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও থেমে যাননি তিনি। ১৪ ঘণ্টা চালিয়ে সকালে পৌঁছে যান সান্তাহারে। এভাবেই তিনি বাইসাইকেলে বাড়ি ফেরার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন।
এপি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ‘লকডাউন’র কারণে ট্রেন ও দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় অন্য কোনো যানবাহনে যেতে চাইলে গাদাগাদি করেই বাড়ি ফিরতে হবে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বাড়ি ফিরতে এমন উদ্যোগ নেই। তাছাড়া বাইসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরা অনেক দিনের শখও ছিল। মনের শক্তির কারণে রোজা রেখে বাইসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরা সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২১
কেইউএ/আরবি