ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মিথ্যা মামলা থেকে সন্তানদের রক্ষা করতে গুলিবিদ্ধ মায়ের আকুতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২১
মিথ্যা মামলা থেকে সন্তানদের রক্ষা করতে গুলিবিদ্ধ মায়ের আকুতি সংবাদ সম্মেলন

বাগেরহাট: বাগেরহাটে সদর উপজেলার ডেমা গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্য প্রার্থী সজিব তরফদার ও তার সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় আদালতে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সুষ্ঠু বিচারের আকুতি জানিয়েছেন গুলিবিদ্ধ মা ছকিনা বেগম বুলু।

১৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সন্তানদের বাঁচাতে শনিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

তিনি বলেন, ১৮ মার্চ রাতে আমার ছেলে ইউপি সদস্য প্রার্থী সজিব তরফদার ও তার সমর্থকরা ডেমা গ্রামে আমাদের বাড়ির পশ্চিম পাশে নির্বাচনী প্রচারণার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় শত্রুতার জেরে ডেমা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন তরফদার ও তার ছেলে মহিবুল হাসান মিন্টুর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমার ছেলেদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। এসময় আমার ছেলেকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে তাদের ছোড়া গুলিতে আমিও আহত হই। এসময় আমার ছেলের নির্বাচনী সমর্থকসহ ১০-১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বন্দুক জব্দ করে এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন তরফদারসহ চার জনকে আটক করে জেলহাজতে পাঠায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দীর্ঘদিন আমার চিকিৎসা চলে। এরই মধ্যে নিজেদের অপরাধ আড়াল করার জন্য মকবুল হোসেনের নিকট আত্মীয় বনি আমিনের স্ত্রী নুরুন নাহার বেগম আমার তিন ছেলে, ও ভাসুরের তিন ছেলেসহ মোট ১১ জনকে আসামি করে আদালতে একটি ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি জামায়াত সরকারের আমলে তরফদার মকবুল হোসেন ভূমি দস্যুতা থেকে শুরু করে এমন কোনো অন্যায় নেই যা তিনি করেননি। এলাকার মানুষের ধানের জমিতে জোরপূর্বক ঘের করেছেন। সেসব অন্যায়ের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এ হামলার ঘটনায়। এছাড়াও ১৯৭১ সালেও তিনি হিন্দুদের বাড়ি ঘরে লুটপাট ও নারীদের সম্ভ্রমহানীর মত অপরাধ করেছিলেন।  

এসময় সঠিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ছকিনা বেগম বুলুর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ভাসুরের ছেলে ইয়াছিন তরফদার। এসময় ইউপি সদস্য প্রার্থী সজিব তরফদারের স্ত্রী নাঈমা বেগম, চাচি ইসমত আরা, ডেমা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মল্লিক আব্দুল আজিজসহ সাবেক চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন তরফদারের অত্যাচারে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ১০ জন উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মনিরুজ্জামান লিটু বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন তরফদার এলাকায় অনেক মানুষকে অত্যাচার করেছেন। তার ঘেরের মধ্যে আমার ১০ কাঠা জমি রয়েছে। দীর্ঘদিন তিনি আমাকে কোনো হাড়ির টাকা দেন না। আমি হাড়ির টাকা চাইতে গেলে, তার ছেলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।  

১৮ মার্চ রাতে ডেমা গ্রামে ইউপি সদস্য প্রার্থী সজিব তরফদার ও তার সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে, এতে অন্তত ১৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়। সজিবের ভাই রাজিব তরফদার সাবেক চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন তরফদারসহ ২৪ জনকে আসামি করে বাগেরহাট মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মকবুল হোসেন তরফদারের সমর্থক বনি আমিনের স্ত্রী নুরুন নাহার বাদী হয়ে সজিব তরফদারসহ ১১ জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।