ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিল যবিপ্রবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২১
সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিল যবিপ্রবি

যশোর: মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা গল্পে গল্পে মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের বীরত্বগাঁথা তুলে ধরেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বিকেলে যবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের গ্যালারিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এ সম্মাননা জানানো হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন, যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন ও রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ আহসান হাবীব। এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিভিন্ন উপহার সামগ্রী। তবে দেশের করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় অত্যন্ত সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিদের বক্তব্যে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাঙালি হলো বীরের জাতি। তারা দেশের জাতীয় বীরকে সম্মান জানাতে পারে। এ জন্য জাতির বিভিন্ন ক্রান্তিকালে বাংলাদেশ হোঁচট খেয়েও আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। এ দেশকে স্বাধীন করতে আপনারা যে অবদান রেখেছেন, এ জন্য অবনতমস্তকে আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

দীর্ঘ আলোচনায় প্রায় ১৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ সম্মুখ যুদ্ধ, কঠোর প্রশিক্ষণ, সহযোদ্ধাদের বাঁচানো, বিভিন্ন এলাকায় মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের যে সহায়তা করেছে সেসব ঘটনার মর্মস্পর্শী বাস্তব গল্প তুলে ধরেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মনি ছিলেন বৃহত্তর অঞ্চলের বি.এল.এফ. (মুজিব বাহিনী)-এর প্রধান। অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর বিবিদ্যালয়ে জীবনের ঘটনাসহ মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরের বিভিন্ন দুঃসাহসিক ঘটনার বর্ণনা দেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রবিউল আলম। তিনি যবিপ্রবি সংলগ্ন সাজিয়ালী, কমলাপুর ও গোবিলা গ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চলের একটি দুঃসাহসিক সম্মুখ যুদ্ধে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের বর্ণনা দেন। একইসঙ্গে এ যুদ্ধের সময় ওই অঞ্চলের মানুষের সার্বিক সহায়তার কথাও তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে যশোর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ বলেন, দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, আমি মুক্তিযোদ্ধা এটাই আমার গর্ব। তাঁর নির্বাচনের জন্য সকলের কাছে দোয়া চান তিনি। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম খয়রাত হোসেন দেশ ভাগ, ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা দাবি, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময়কার ঘটনা প্রবাহের ধারাবাহিক বর্ণনা দেন তিনি। যুদ্ধের সময় মনিরামপুরের একটি পরিবার কিভাবে তাঁকে ও মুক্তিবাহিনীকে সাহায্য করেন সে বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন। মুক্তিযুদ্ধের আরেক বীর সেনানী এস এম ওয়ালিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিমান বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। চাকরি থেকে চলে এসে মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদানসহ সেই সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন ঘটনার সাবলীল বর্ণনা দেন তিনি।

যবিপ্রবির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মো: রফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল মান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: ইসমাইল হোসেন, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এ. এইচ. এম. মুযহারুল ইসলাম মন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আব্দুস সবুর হেলাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. এ. সামাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোসলেম উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, যবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আলম হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে যবিপ্রবির বিভিন্ন অনুষদের ডিন, চেয়ারম্যান ও দপ্তর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. জিল্লুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ০৪১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২১
ইউজি/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।